অন্তরের গহন পাতালে

একদিন হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম অনেক দূর
বিয়াবানে অভীষ্ট বস্তুর খোঁজে। হঠাৎ সবুজ
গাছগাছালির মধ্য থেকে ভেসে এল গাঢ় এক
কণ্ঠস্বর, ‘কিয়দ্দূরে একটি প্রাচীন কূপ আছে
তোমারই ব্যাকুল প্রতীক্ষায়, তার কাছে চলে যাও। কিছু পথ
হেঁটে ঠিক প্রাচীন কূপের কাছে গেলে, ‘এসো, এসো
আমার ভেতরে ডুব দাও। সেই ধ্বনি মেনে নিয়ে বারবার
ডুব দিয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসে ফের হেঁটে চলি।
হেঁটে যেতে যেতে অনুভব করি, ক্লান্তির কুয়াশা
আমাকে ধরেছে ঘিরে। বৃশ্চিকের দংশনের কাতর, তবু হেঁটে
যাব যত পারা যায়। একটি নদীর কাছে পৌঁছতেই নদী
উজ্জ্বল জলজ কণ্ঠে বলে, ‘আমার গভীরে ডুবে দ্যাখো,
তুমি যা খুঁজছে পেয়ে যেতে পারো হে ক্লান্ত পথিক। বহুক্ষণ
নদীর গভীরে ডুবে বারবার শূন্যতা নিয়েই
ফিরে আসি। এ বঞ্চনা, এই প্রতারণা আর কত
সওয়া যায়? মনে হলো, চাঁদকে খুবলে খাচ্ছে ক্ষুধার্ত নেকড়ে।
অবসন্ন সত্তা গাঢ় নিদ্রায় ডোবার বাসনায়
কেমন উন্মুখ হয়ে ওঠে। চকিতে একটি ধ্বনি
আমার অন্তরে জেগে ওঠে, বেজে ওঠে, ‘ওহে ক্লান্ত পথচারী,
ইতস্তত ঘোরাঘুরি ছেড়েছুড়ে খুব নিরালায়
নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফজুল বচসা থেকে গাঢ়
ডুব দাও, বারবার ডুব দাও অন্তরের গহন পাতালে;
সন্ধানে টেনো না ছেদ কিছুতেই, তোমার অভীষ্ট
ঝলসে উঠবে চিদাকাশে, উদ্ভাসিত হবে তুমি।