অথচ আমার ঘরে

যখন তোমাকে দেখি তোমার নিবাসে, দেখি তুমি
বিষাদের ছায়া নিয়ে খেলা করো; আছো কিংবা নেই
বোঝা দায়। কখনো কখনো
মনে হয় যেন তুমি ছায়ার মতন জালে আটকা পড়েছো
অসহায়, চারদিক থেকে
ছুটে আসে ঝাঁক ঝাঁক ছায়ার হাঙর।

তখন আমার
বুকের ভেতরে শত শত নক্ষত্রের মৃত্যু হয়,
দাবানলে পোড়া যূথবদ্ধ ঘোড়া আর্তনাদ করে,
তুষারের কামড়ে বাগান
অন্ধ হয়ে যায় এক লহমায় আর
পুরোনো কবর খোলে মুখ ব্যাপক ক্ষতের মতো।
যখন তাকাও হেসে, হঠাৎ তোমার
বালিকা বয়স, যা’ দেখিনি আমি কখনো, আমার
ভাবনায় ভেসে ওঠে। অবচেতনায় কতিপয়
ছবি জেগে ওঠে, যেন গির্জের রঙিন কাচে গূঢ় আভাসিত
চিত্রাবলী! চাঁদ খুলে ফেলে তার নাইটি যখন,
মনে পড়ে শুয়ে আছো স্বপ্নের ডিভানে।

সংশয়ের ঘুণ
এখনো তোমাকে কুরে কুরে খায়, তুমি
তাই বিষাদের ছায়া নিয়ে খেলা করো, নাকি এই
বিষাদের নেই কোনো শেকড় বাকড়।

যখন শুনবে তুমি জানালার বাতাসের টোকা,
বুঝে নিও আমার নিঃসঙ্গ ভালবাসা ডেকে যায়
তোমাকেই তোমার মধুর নাম ধ’রে;
যখন দেখবে তুমি কোনো পাখি ছোঁয়
গাছের যৌবন, জেনো আমার সতেজ ভালবাসা
তোমাকেই ছুঁতে চায় সকল সময়;
যখন তোমার চোখে পড়বে নৌকোর
তীর-ছেড়ে-যাওয়া, বুঝে নিও
আমার জাগর ভালবাসা যাত্রা করে
তোমার দিকেই।

আমার ঘরের
প্রতিটি জানালা গ’লে রোদ আসে, হাওয়া
বয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে, চড়ুই যুগল ঘর বাঁধে
আমার এ ঘরে শীতে। বস্তুত এখানে
অনেকেরই আনাগোনা সকল ঋতুতে,
অথচ আমার ঘরে কোনোদিন পড়ে না তোমার পদচ্ছাপ।