অতিবর্ষণের পর

অতিবর্ষণের পর ঝলসিত রৌদ্রের স্লোগান
অন্ধকারে টর্চলাইটের মতো। মগ্নতায় দেখি,
হৃদয়ের উঠোনে চন্দনা খাচ্ছে খুঁটে খাদ্যকণা।
আকাশ-গড়ানো রোদ ভালো লাগে, চক্ষুস্থিত আভা
বাতাসে উড্ডীন পায়রার ঝলসানি দেখে আরও
দীপ্তিময় হয়। প্রতিবেশীর কলহ, আপিসের
খাটুনি, গ্রেডের মোহ, খিস্তি, কম্বোডিয়া,
মধ্যপ্রাচ্য, প্রাথমিক শিক্ষককুলের কিছু মুখ,
দুর্ভিক্ষ-শাসিত মুখ, আমার নিজের ছেঁড়া জুতো,
মুদির দোকানে খ্যাঁচামেচি, বাজারের ফর্দ, ভিড়,
বীমার প্রাণান্তকর কিস্তি কেমন তলিয়ে যায়
অদূর পায়রাময় বাতাসের স্নিগ্ধ স্বর শুনে
ভাগ্যিস কয়েক দিন একঘেয়ে বর্ষণের পর
আবার উঠেছে রোদ খিলখিলিয়ে, আকাশের নীল
ব্যানারে কী যেন দেখে চক্ষুদ্বয় প্রীত, হৃদয় তো
প্রজাপতি হতে চায়, মধ্যবিত্ত ছা-পোষা মানস
চায় না বিরোধ কোনো, হাঙ্গামা-হুজ্জতি চক্ষুশূল।
বাজারের থলি হাতে পথ চলি শাক মাছ কিনে
বাড়ি ফিরি, রেশনের লাইনে দাঁড়াই, কখনোবা
ছেলেমেয়েদের ফাঁকি দিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে সিনেমায়
যাই, রেস্তোরাঁয় খাই। অতিবর্ষণের পর রোদ
কিংবা নীল দেখে মধ্যে মধ্যে খুবই আহ্লাদিত হই।
কখনো চাইনে যুদ্ধ, শবগন্ধময় জনপদ
বিভীষিকা অতিশয়, শ্মশানে নিবাস চায় কেউ?
ব্যাকুল প্রার্থনা করি, পৃথিবীর সব অস্ত্রাগার
কোমল উদ্যান হোক, বোমারু বিমান পারাবত।