পালা

আমরা সবাই দেখি, গ্রাম্যজন, ক্ষিপ্র নাগরিক,
সবাই প্রত্যহ দেখি একই পালা। চির-চেনা সব
কুশীলব, পোশাকের বেবাক ভাড়াটে জেল্লা আর
স্টেজময় পায়চারি, মুখভঙ্গি, কোমরে ঝুলন্ত
তলোয়ার, সিংহাসন ইত্যাদি ইত্যাদি দেখে দেখে
এমন মুখস্থ হয়ে গেছে সব-কে কোথায় কত
উঁচিয়ে-নামিয়ে পর্দা গদ্যে-পদ্যে জুড়বে সংলাপ
কতক্ষণ, ঠিক বলে দিতে পারি আমরা সবাই।
বস্তুত সবাই দেখি দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের
পালা রোজ। কেউ দিই শিস, কেউ ফুঁকি খাকি বিড়ি,
হাই তুলি মাঝে-মাঝে। বিশ্রামের ঘণ্টা বাজলেই
বাইরে বেরিয়ে এসে কখনো ফুলুরি কিনি, খিস্তি
খেউরে ভীষণ মাতি, প্রস্রাব ছিটিয়ে ঝোপেঝাড়ে
ফিরে আসি, পুনরায় একই পালা বাদ্যসহকারে
শুরু হয়, বস্ত্রহরণের পালা। এই পালা আর
বেশিদিন, বুঝেছ হে অধিকারী, দেব না চলতে
বলে গনগনে কেউ হঠাৎ দাঁড়িয়ে পুড়ে বুক
টান করে। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বিস্ফারিত চোখে দেখি
লোকটাকে, মনে হয়, দুঃশাসন পালাবে এক্ষুণি।