প্রতিদ্বন্দ্বী

কী একটা জেগে ওঠে অন্তর্গত গুহায় এবং
বেখেয়াল সবাইকে দিব্যি দারুণ চ্যালেঞ্জ দিয়ে
বসে আছি। গাছ, নদী ফুল, পাখি এবং পাহাড়
সবাইকে হারিয়ে দেয়ার পণ করেছি বস্তুত।

গাছের উদ্দেশে বলি,-কেন তুমি এমন উদ্ধত?
আমিও আমার বুকে রাখি পাতাদের ঝিলিমিলি,
অনেকেরে দিই ছায়া ভালোবেসে, এমন কি ক্রুর,
প্রতিহিংসাপরায়ণ শক্রকেই কখনও সখনও।

নদীর সম্মুখে করি উচ্চারণ নদীর মতোই
কণ্ঠস্বরে- আমিও তো যাচ্ছি বয়ে, আমারও হৃদয়
সরাক্ষণ যায় ভেসে জলে, কখনও প্রশান্ত আমি,
কখনও-বা ফুঁসে উঠে, আমিও সহিষ্ণু অতিশয়।
তাকিয়ে ফুলের দিকে উঠি মেতে স্বগত ভাষণে
কেন তুমি গর্বে ওঠো দুলে ক্ষণে ক্ষণে? দ্যাখো
আমার ভেতর কত গোলাপ, করবী, গন্ধরাজ
ছন্দিত, সতেজ; ওরা ঝরে পড়বে না অবেলায়।
পাখিকে শুনিয়ে বলি,-কেন তুমি গর্বে থরো থরো?
আমার কি নেই গান, ভাবো? আমার সত্তার
অত্যন্ত গভীর থেকে জাগে সুর, প্রাণপ্লাবী সুর।
প্রত্যহ আহত আমি নিজে, তবুও বানাই গান।

অনেক উঁচুতে গিয়ে পাহাড়কে করি শ্রোতা, বলি-
এই দ্যাখো, আমাকেও দ্যাখো তুমি, আমি মাথা নত
করি না কারুর সম্মুখেই। চক্রান্ত কি হামলার
অন্ত নেই, তবু সংশয়ের বাঁকে রয়েছি অটল।

একজন যাকে আমি কখনও দেখিনি, কিন্তু যার
সঙ্গে হতে পারে দেখা যেকোনো মুহূর্তে, সেই
পুশিদা মানুষটিকে মনে মনে বলিনি কিছুই।
তার কাছে, শুধু তার কাছে আমি হেরে যেতে পারি।