পূর্ণতার প্রতীক্ষায়

বুঝিনা অনাদিকাল থেকে
হাত দুটো প’ড়ে আছে বনাঞ্চলে বিশুদ্ধ জ্যোৎস্নায়
পা দুটি জলের স্নেহ পাচ্ছে নদী তীরে, রাত্রিদিন
আমার স্পন্দিত বুক কাজল মাটিতে বাউলের
একতারা এবং আমার মাথা পাহাড় চূড়ায়
ঈগলের ডানার ছায়ায় জপ করে
সৌন্দর্যের; আমি
খণ্ড খণ্ড হ’য়ে সম্পূর্ণতা খুঁজি গূঢ় তপস্যায়।

আমার নিবিড় ধ্যান ঘাসের ডগায়
এক ফোঁটা প্রসন্ন শিশির
অথবা ফুলের মধু, হরিণের মুখে লেগে-থাকা
তৃণমূল, নিজের ভেতর থেকে চকিতে বেরিয়ে
নিজেকেই দেখি
নানা কোণ থেকে, চেনা দায় থিতু বুদ্ধের আঙ্গিকে।

আমাদের দেশ এক পাগলা গারদ। বাসিন্দারা
কখনো চেঁচায়, কখনো বা হাসে, কাঁদে
কখনো অন্যের স্বরে কথা বলে বেবাক উদ্ভট,
কখনো এতই স্বাভাবিক ভিন্ন মুখচ্ছদে, দেখে
নিজেকেই খুব প্রতারিত মনে হয়। নিজেকে সরিয়ে নিয়ে
নিরালায় আমিই আমার ধ্যান হই।

হাত দুটো পানি-ধোওয়া পায়ের অম্লান পাতা আর
পদতল বুক আর বুক আমার মাথাকে দ্যাখে
দিনরাত। তারপর নেত্রপাতহীন
নীলিমায় ভাষাতীত স্তোত্র ভেসে যায়। সেই স্তোত্রে সুনিশ্চিত
হাজার বছর আগেকার ছায়া ফিস্‌ ফিস্‌ করে,
ক্রমাগত নৈঃশব্দ্যের পাঠ নিই মেঘেদের কাছে।

সারাদিন দাঁড়ে-খাটা মাঝির মতোই
দিনান্তে ঘুমাই পাটাতনে নিশ্চেতন,
বিকলাঙ্গ প্রহরের স্বপ্নের ভেতরে
পূর্ণতা দাঁড়ের ঘায়ে গুঁড়ো কিছু ঢেউ।