রাত তিনটের

ইদানিং রাত তিনটের কিংবা সাড়ে-তিনটের
ঘুম ভেঙে যায়।
মশারী সরিয়ে উঠি, জগ থেকে ঢেলে পানি খাই
দু’তিন গেলাস, নির্নিমেষ
তাকাই বাইরে কিছুক্ষণ, রাত্রিমাখা স্তব্ধ ক্যাম্পে
মলিন প্রহরারত সৈনিকের মতো গাছগুলি
দেখি আর মনে প’ড়ে যায় শাদা-লাল তোমার বাড়ির কথা।

তোমাকে করাচ্ছে স্নান ঘুম। এ মুহূর্তে নিরিবিলি
তোমার বাগানে অন্ধকারে
জেগে আছে গোলাপের দ্যুতি। যে-আঁধার গোলাপকে
ঘিরে রাখে, আমি সেই অন্ধকারকেই
হৃদয়ে ধারণ ক’রে, ইচ্ছে হয়, তোমার বাড়ির
চতুর্দিক প্রদক্ষিণ করি, মনে মনে বলি অসময় হোক
সুসময়। ভাবি ভোর না হতেই যদি
তুমি এসে বাগানে দাঁড়াও ভোর হবে লহমায়।

একা ডাল নুয়ে আছে দিঘিতে, যেমন
আমার আগ্রহ ঝুঁকে থাকে তোমার স্বপ্নের প্রতি-
এবং আমার রাত তিনটের এই
জেগে-থাকা তোমাকেই ডাকে বারবার। হাওয়ার আঙুলগুলি
তোমার রেশমি চুলে, ঠোঁটে
আর নাভিমূলে
নিবিড় গোপনে গুঁজে দিয়ে আসে আমার প্রখর চেয়ে-থাকা
আমার আনন্দ আর আমার বিষাদ।।