রোগশয্যা থেকে

হাসপাতালের বেডে কার হাত অপরূপ ছায়া
হয়ে এই জীর্ণ রুক্ষ শরীরে আমার
গাঢ় চুমো হয়ে
গান গায়, যেন বসন্ত বাহার।
যন্ত্রণা নিমেষে পলাতক, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন
বড় অবান্তর লাগে, অস্ত্রোপচারের তীব্র দাহ
কী করে উধাও হলো, বোধের বাইরে চলে যায়।
আমি রাঙা মেঘে, ফুলশয্যায় একাকী।


মধ্যরাতে এ কেমন হট্টগোল? হাটবাজারের এলোমেলো
সপ্তকণ্ঠ হাঁকে, বচসার শুরু, সাদা আলখাল্লা-পরা
গুরু একা হেঁটে যান ভিড়ের উজান ঠেলে, হাতে
একতারা, এক্ষুণি সুরের ঝর্ণাধারা
করবে প্লাবিত হাটবাজারকে, তবু
উদাসীন সাঁই চলেছেন ধূলিসিদ্ধ পায়ে কোন্‌
বিরানায়, পারে না হানতে কেউ। তাঁর
গোধূলি রঙিন মুখে মরমিয়া হাসি।


হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণাকাতর রোগী কাকে
খোঁজে মধ্যরাতে? কোমরের ব্যাণ্ডেজ শিথিল কেন?
যে তাকে সবার দৃষ্টি এড়িয়ে চুম্বনে
শান্তির হ্রদের তীরে নিয়ে যায়,
আলিঙ্গন করে নীলপদ্মের ভেলায়, প্রায়শই পদ্যে
পলাতক শব্দের সন্ধান দিয়ে ঠিক
পঙ্‌ক্তিমালা সাজায় কাগজে, সে কি তবে
উত্তপ্ত কপালে তার রাখবে না হাত অবেলায়?