সায়োনারা

দূর ওসাকায় সন্ধ্যাবেলায়
প্লাটফর্মের আনাচে কানাচে তাড়া;
কেউ বলে এলে এতদিন পরে,
কেউ বা ব্যাকুল সায়োনারা, সায়োনারা।

তোমাকে সেখানে দেখবো ভাবিনি,
দেখেই শিরায় জাগলো বিপুল সাড়া।
প্রথম দেখার নিমেষেই হাওয়া
বলে কানে কানে সায়োনারা, সায়োনারা।

ট্যাক্সিতে রাতে তুমি আর আমি,
নেচে উঠেছিল তোমার চোখের তারা।
ওসাকা-রাতের দৃশ্যাবলীতে
লেখা ছিল বুঝি সায়োনারা, সায়োনারা।

সুন্দরীতমা দৈবদয়ায়
এসেছিলে কাছে, হৃদয় আত্মহারা।
চোখের পলকে সময় ফুরায়,
রটে চরাচরে-সায়োনারা, সায়োনারা।

ওসাকার সেই শহর-মরুতে
বস্তুত তুমি মরুদ্যানের চারা,
আমার তামাটে সত্তা তোমার
ছায়ায় শুনেছে সায়োনারা, সায়োনারা।

আমরা দু’জন করেছি ভ্রমণ;
তুমি হিরোশিমা, তুমিই কিয়োতো, নারা,
পায়ের তলায় হলদে পাতারা করে
ফিস্‌ ফিস্‌-সায়োনারা, সায়োনারা।

মন্দিরে দেখি বুদ্ধ মূর্তি,
শিল্পিত হাতে বইছে পুণ্যধারা,
তোমার ও-হাতে হাত রাখতেই
পাখি গেয়ে ওঠে সায়োনারা, সায়োনারা।

কথায় কথায় বলেছিলে তুমি
কখনো দু’পাতা মিশিমা পড়েনি যারা,
তারা জানবেনা জাপানী নারীকে;
তোমার দু’চোখে করি পাঠ সায়োনারা।

শেষ রাত্রির কেটেছে আলাপে,
শরীর তোমার যেন স্বপ্নের পাড়া।
লিফ্‌ট-এ নামার কালে, মনে পড়ে,
বলেছিলে তুমি সায়োনারা, সায়োনারা।

তোমার স্বদেশে প্রবাসী ছিলাম,
ছিলাম উদাস, কিছুটা ছন্নছাড়া।
হৃদয়ে আমার পরবাস আজ,
প্রাণে বাজে শুধু সায়োনারা, সায়োনারা।