শ্বেতপদ্ম

অস্ত্র নেই হাতে আর দাঁড়িয়ে রয়েছি বর্মহীন, সঙ্গীহীন,
অবেলায় সেই কবে থেকে। ছুটে আসে
সড়কি, বল্লম, ট্যাটা, ঝাঁক ঝাঁক, কখনো পাথর
আমার উদ্দেশে। কেউ লাফ
দিয়ে ঘাড়ে পড়ে, চেপে ধরে টুঁটি, কেউ
চুল টেনে হি’চড়ে হি’চড়ে
নিয়ে যায় থকথকে বর্ষার কাদায়, কাদা চেটে
খেতে বলে লাথির ভাষায়।

এ ব্যাপক আঁধিঝড়ে ডানে বাঁয়ে,
যেটুকু সম্ভব দেখি, দেখি চোখ মেলে
এলেবেলে মুখগুলি। সকলেই
খুব চেনা, অথচ কী ভীষণ অচেনা মনে হয়। কারো মুখে
ভালুকের মুখ ব’সে গেছে, কারো চোখে
হায়েনার চোখের আদল,
ডোরাকাটা জ্বলজ্বলে বাঘের প্রচ্ছদ
কারো গায়ে সাঁটা, চোখ আগুনের ভাঁটা।

থমথমে এখানে এখন আসে যদি কেউ পাবে সে দেখতে
আমার রক্তের দাগ, দেখবে রয়েছে
প’ড়ে ছেঁড়া ত্বকের মাংসের
টুকরো ইতস্তত
এবং দেখবে সেই থকথকে কাদায়, রক্তের
দাগ জুড়ে গোধূলিবেলায়
শ্বেতপদ্ম কী একাগ্র নৃত্যপর, অপরিকল্পিত,
শিশুদের খেলার বিষয়।।