সোনার তরী

‘এই রোকো’ বলে কোনো জাঁদরেল ট্রাফিক পুলিশ
পারে না করতে রোধ কখনো তোমার পথ কিংবা
চেকপোস্টে তোমাকে হয় না জমা দিতে পাসপোর্ট
ভিসা; বজ্রে বাজিয়ে মোহন বাঁশি আসো মহারাজ
মায়াবী সসারে অপরূপ অগোচরে। কোনো দিন
ঝকঝকে বাসস্টপে, মাথা-ঝলসিত ফুটপাতে
অথবা পার্কের বেঞ্চে ব’সে জুতোর কাদার দিকে
অনিমেষ তাকিয়ে থাকার ক্ষণে, টেলিফোনে কথা
বলতে বলতে মৃদু এমনকি মফস্বলগামী
ট্রেনের বগিতে ঢুলে, কবিতার কাঙাল আমরা,
অকস্মাৎ পেয়ে যাই তোমার সাক্ষাৎ। প্রতিদিন
তোমার জন্যেই কত দখিন দুয়ার থাকে খোলা।

এ শহরে স্বপ্নের দোকান নেই কোনো, আছে শুধু
দরাদরি, বচসাও অন্তহীন। হলুদ দাঁতের
কিছু লোক, বেসামাল, এমনকি অন্ধ ভিক্ষুকের
দোতারাও নেয় কেড়ে দারুণ আক্রোশে; চৌরাস্তায়
দাপায় লাফায় আর কালো পিরহানে ঢেকে ফেলে
সবগুলো উজ্জ্বল মিনার। উপরন্তু বল্মীকের
উপদ্রবে ক্রমাগত হচ্ছে নোংরা প্রতিটি সোপান।
এরই মধ্যে তুমি আসো কাব্যের মহান সান্তা ক্লস।

নিষ্প্রদীপ ঘরে থাকি রাত্রিদিন। দরজা-জানালা
বন্ধ সবি। বড় শ্বাসকষ্ট হয়; হঠাৎ কখনো
ইচ্ছে করে ‘এ্যাম্বুলেন্স চাই’ বলে তারস্বরে দূর
আকাশ ফাটাই। কখনো-বা মাছ শিকারির মতো
ব’সে থাকি, নিবিড় অপেক্ষমাণ। এ বন্ধ ঘরেও
ভিড়ছে সোনার তরী, আপনারা স্বচক্ষে দেখুন।