সঞ্জয় কেথায়?

বসে থাকি বন্ধ ঘরে অন্ধের মতন, অস্থিরতা
এলে ব্যেপে করি পায়চারি কখনও-বা, প্রৌঢ় প্রেম
তক্তপোশে তন্দ্রাচ্ছন্ন। কোথায় যে ঘণ্টা স্মৃতিবৎ
কী সোনালি বাজে, শুনি। যাবো আমি? এখন কোথায়?

বাইরে জীবন তীক্ষ্ণ স্বরে হেঁকে যায় ক্রমাগত
অভ্যাসবশত আমি আমার ঘরেই থাকি একা,
বইয়ের পাতায় চোখ, মাঝে-মাঝে রুক্ষ শীর্ণকায়
সন্তের মতন হয়ে যাই অন্তর্গত বনবাসে।

কখনও হঠাৎ তাপ বেড়ে যায় শরীরে আমার-
বুঝিবা ১০৩, ঘরের দেয়াল দেখি
কোথায় গিয়েছে উড়ে, ঘর আর ঘর নয়। আমি
নির্জন প্রান্তরে নতজানু, সূর্য নিচে, বহু নিচে

জ্বলন্ত এসেছে নেমে, চতুর্দিক ধোঁয়াময়, মেঘ
নেই একরত্তি, অকস্মাৎ চোখ ফেরাতেই ফের
ফুলের ডালের মতো কিছু তন্বী হাত ভাসমান,
আমার শরীর ফুঁড়ে কত রাঙা পাখি উড়ে যায়!

জানি না প্রত্যহ কী-যে ঘটে রাত্রিদিন আজকাল
আমার এ চার দেয়ালের বাইরে, হঠাৎ কোনো
শব্দ এসে আমাকে ঠোকর মারে, আজ কে আমাকে
বলে দেবে কোথায় কী হচ্ছে, কারা অস্ত্রে দিচ্ছে শান,

কারা মিত্র সেজে শক্রতায় মাতে, বকুলতলায়
শোওয়ায় কবন্ধ লাশ? কে আমাকে বলে দেবে দূরে
অত কোলাহল কেন? সঞ্জয় সে-ও তো নেই কাছে,
হয়তো মিলে গেছে ঐ ভিড়ে, তারও গলা সেখানেই।