সত্যি-বলতে

সত্যি-বলতে আজকাল যে যার মর্জিমাফিক
আমার কবিতার গালে ঠিক গুনে গুনে
ঠাস ঠাস চড় চাপড় লাগিয়ে দ্যায়। কেউ পানের
পিক ছোঁড়ে মুখে, গলা ধাক্কা, গুঁতো,
পাক্কারদ্দা আছে লেগে। কেউ
মোড়লী চালে কান মুচড়ে নিজের তপ্ত মেজাজে
ঢালে ঠাণ্ডা পানি। কেউবা ফেউ লেলিয়ে
পরখ করে, কান্না জুড়ে দ্যায় কিনা অভিমানী
আমার পংক্তিমালা। মাতব্বর
সেই লোক, হ্যাঁ, হ্যাঁ, যে রাষ্ট্বপতিকে নিজের বাপের চেয়েও
কদর করে বেশি, ঘাসের সাপের ধরনের
সেই লোক, আমার কবিতার
একটি হাত খসিয়ে র্যা কেট বানিয়ে টেনিস
খেলতে শুরুকরে।
অন্যজন পাঁজরের হাড় খুলে নিয়ে
পগার পার, পাঁড়মাতাল
এক মুরগীচোর আমার নগ্ন কবিতার ঠ্যাঙ ধ’রে
করে টানাটানি, মারে ল্যাঙ। এক লেজযুক্ত
সজ্জন সাফ সাফ ব’লে দিলো আমার সদ্য-লেখা
পংক্তিমালাকে, ‘এই যে শুনছিস, যার
হাত থেকে উৎসারিত তোরা, সেই উজবুক
খাসির গোশ্তের মতো মৃত
এক দশক আগে। বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি? দাঁড়া
বেকুবের দল, কে আছিস তাড়াতাড়ি
আলমারি থেকে বের ক’রে আন ওর ম্রিয়মাণ কংকাল।

এরই ফাঁকে বেশ্যালয়-ফেরত এক মাস্তান
বেলফুল জড়ানো হাতে
আমার কবিতার মুণ্ডু লোফালুফি
ক’রে চিবুতে থাকে, যেন কচকচ খাচ্ছে টোমাটো।
পাড়ার পাঁচজনের এই কাণ্ড কারখানা দেখে
কবিতা আমার বেদম হাসে, হেসেই খুন, যেন সার্কাসে
কয়েকটি বেবুন জবর লাফাচ্ছে, দিচ্ছে সুড়সুড়ি,
কাতুকুতু, থুতু ছিটোচ্ছে যেখানে সেখানে,
ভেংচি কাটছে, ইত্যাদি।
ব্যপারটা এরকম, দেখে-শুনে কিন্তু মনেই
হয় না পিলে চমকে-দেওয়া এক জন্তু আমাদের গিলে
খেতে এগিয়ে আসছে হেলে দুলে,
লেজ আছড়ে কাঁপাচ্ছে মাটি।

২১।২।৯০