স্পর্শ

বাড়িয়ে দু’বাহু বারে বারে তোমার দিকেই যাই
স্বপ্নচালিতের মতো, সম্মুখে দাঁড়াই,
দেখি আশ্চর্যের অক্ষরেই স্মিত লেখা
তোমার শরীর প্রতিবার, যদিও প্রত্যহ এই দেখা।

যেন ঐ হাত, গাল, ঠোঁট, জানু, সুহাস চিবুক,
সুগোল স্পন্দিত বুক
ছুঁলেই তোমাকে পাবো, তুমি
হৃদয়ের ভূমি
সৌরভে ভরিয়ে দেবে, ফলাবে ফসল থরে থরে।
স্বপ্নের রঙের মতো মুহূর্তের অভ্যন্তরে এই জীর্ণ ঘরে
শবে-বরাতের আলো দেখবো এবং স্বয়ম্বরা ফুলে ফুলে
যাবে ছেয়ে ব্যর্থ প্রেমিকার মতো রিক্ত মেঝে, তোমাকেই ছুঁলে।

একজন উন্মাদকে যে-হাতের ভেতর লালন করি আর
যে-ঠোটে সংযত রাখি একজন মাতালকে, সকল চিৎকার
অন্তরালে পুষি শিরাপুঞ্জে যে-বুকের, তারা ঠিক
পাল্টে যায় নিমেষেই তোমার সান্নিধ্যে, কী বেল্লিক!
লিখেছি তোমার হাতে স্পর্শাক্ষর, বুকে মাথা,
তোমার পায়ের দু’টি পাতা
হেসে কুটি কুটি এই আমার পদাঙ্গুলের ছোঁয়ায়, তোমাকে
শেকড়-বাকড়ে বাঁধি অস্তিত্বের, আলিঙ্গনে বুভুক্ষু সত্তাকে
মিশিয়ে তোমার দিকে চাই,
তবু বুকে মরু, গলে যাও তুমি, মিলে যাও-
কোথায় উধাও,
এ খর শরীরব্যাপী স্পর্শে কী তোমার পাই?
এ জন্যেই সবখানে যে-নেই কেমন ভাসে, তারই শূন্য অন্তহীন
পেছনে পেছনে করি ধাওয়া
যোগাযোগহীন রাত্রিদিন
বুকে নিয়ে আর্তি- প্রাণপ্লাবী হাওয়া বয়, শুধু হাওয়া।