শ্রমিকের মতো

কখনো চাইনি হতে দরবেশ, তাই
জঙ্গলে বাঁধিনি ডেরা, শুইনি গুহায় কোনোদিন;
সেতারের ঝালার মতন রোদে আনন্দ খুঁজিনি।
কী মোহন আকর্ষণে অদ্যাবধি লোকালয়ে আছি, থেকে যাই।

এখনো এখানকার পথঘাট, জনমানুষের
কলরব ভাল লাগে, জূড়ায় দু’চোখ
লতাগুল্ম, ঝোপঝাড়, বেদেনীর কোমরের মতো
নদীর গহন বাঁক দেখে,
দেখে শিশুদের খেলা মাঠে
অথবা সূর্যাস্তমাখা দিঘির কিনারে।
নিসর্গের অভিভাবকতা
না বুঝেই ওরা খুব উপভোগ করে।
এখনো আমার
শরীর বাঁশির মতো বেজে ওঠে তন্বীর আয়ত চোখ দেখে।

লোকালয় এখনো আমাকে বড় আকর্ষণ করে।
কখনো লুন্ঠিত হই, কখনো সতেজ
পেশীগুলি ছিঁড়ে যায় লোলুপ কামড়ে, চক্ষুদ্বয়
অন্ধ হয়ে আসে কী ব্যাপক ধূলিঝড়ে,
দাঁতে দাঁত চেপে
তবু লোকালয়ে আছি, থেকে যাবো যতদিন থাকা
সম্ভব এখানে
মানুষের প্রকৃত আঙ্গিকে।

যতদিন আছি,
ভিখারীর মতো নয়, শ্রমিকের মতো তেজী, আন্দোলনলিপ্স,
পদক্ষেপে জীবনের কাঁধে হাত রেখে
পর্যটন করে যাবো তেজস্ক্রিয় আবর্জনাময়
আমাদের এই পৃথিবীতে, যেখানে দেবতা দ্রুত
নিবিড় ছাগল হয়ে যায় আর ছাগল দেবতা!