তার খেদোক্তি

ভীষণ অসুস্থ কবি; শয্যাগত তিন মাস ধরে। মুখে তার
রুচি নেই, বমি হয় ঘন ঘন, রাত্তিরে গায়ের ঘুম,
কিছু ছায়া ভাসে চোখে। যে-নারী কবির প্রিয়তমা
সেভাবে বিষণ্ণতায় ডুবে, ‘প্রজাপতি,
লেজঝোলা পাখি, পিঁপড়ে, দেয়ালবিহারী টিকটিকি, এমনকি
অদূরে দাঁড়ানো নিম গাছের সবুজ পাতা, রোদ, জ্যোৎস্না আর
বৃষ্টিধারা দ্যাখে তাকে বারবার বাঁধহীন। কাব্যলক্ষ্মী রোজ
গভীর রাত্তিরে যান তার শয্যাপাশে, জপেন কত না পঙ্‌ক্তি
কানে কানে; শুক্‌নো ঠোঁটে মদির আবেগে দেন এঁকে
অগণন তপ্ত চুমো, অথচ পারি না আমি যেতে
আমার কবির কাছে যখন তখন। হা সমাজ,
হায় লোকলাজ, যাক গুঁড়িয়ে সকল কিছু আজ।
গুঁড়িয়ে যায় না কিছু, সমাজপতিরা আজও বড়ই কঠোর,
বিদ্রোহের শিখা ফুঁয়ে ফুঁয়ে নেভাবার
আয়োজনে বেজায় তৎপর অনেকেই। কত হৃৎপদ্ম শুকায়
নিষ্ঠুর খরায় অন্তরালে, জাঁহাবাজ নখর এবং ওষ্ঠ
ঠুক্‌রে ঠুক্‌রে খায়্য প্রণয়ের চোখ, মানবতা শুধু
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে আর চিতাগ্নিতে পোড়ে বিবেকের শব।

৭.১১.২০০০