তিনি

কতদিন তাঁকে খাটো বারান্দায় ম্লান কেদারায়
নিরিবিলি, একা, বসে থাকতে দেখেছি। হাতে বই,
কফির পেয়ালা শূন্য; কখনো পুরোনো দেয়ালের
বেড়ালের ক্ষিপ্র গায়ে রাখতেন চোখ, কখনো বা
দিতেন গড়িয়ে দৃষ্টি বাগানে এবং বড় বেশি
হতেন কাতর দুষ্ট বালকেরা ঢিল ছুঁড়ে ছুঁড়ে
আহত করলে কোনো নিঃসঙ্গ পাখিকে খেলাচ্ছলে।

বাগানে দাঁড়ালে ফুলগুলি দিতো ধরা তাঁর হাতে
গভীর আস্থায় আর শালিকের মৃদু শব্দাবলি
কী যেন বলতো তাঁকে। কী হবে বসন্ত যদি আর
কখনো ফিরে না আসে পৃথিবীতে? যদি চিরতরে
গান বন্ধ করে দ্যায় ভুল করে পক্ষীকুল তবে
পাবো কি কখনো আর নিরঞ্জন কাল? ইতোমধ্যে
আমাদের পায়ের ক’বিঘা মাটি ভীষণ অস্থির
দু’তিন দশক থেকে, ঘাস তো সবুজ নেই আর…”

-এসব ভাবনা তাঁকে বিহ্বল করেছে কতদিন।
কখনো ফুলের হয়ে কখনো-বা শামুকের হয়ে
বেঁচেছেন। একদিন কী এক দুর্জ্ঞেয় হাহাকারে
দীর্ণ হয়ে বারান্দায় বাগানের প্রসন্নতা ছেড়ে
প্রতিধ্বনিময় মাথা নেড়ে-নেড়ে, দেখলাম, তিনি
স্তব্ধ ক্রাচে ভর করে চলেছেন হেঁটে নীলিমায়!