তোমাকে মনে পড়া না-পড়া

শহরের বুকে চেপে বসেছে একটা ভেজা কালো কম্বল
এবং আমি আমার নিঃসঙ্গতার সঙ্গে
পেশেন্স খেলছিলাম অনেকক্ষণ থেকে। ভাবছিলাম,
ঘরের ভেতর অন্তত কোনো বেড়াল থাকলে ভালো ছিল।

তুমি চলে যাবে অনেক দূরে, এই ভাবনার
রোমশ ইঁদুর যখন ধারালো দাঁতে
বেশ দক্ষতায় কাটছিল আমার হৃদয়তন্ত্রী, হঠাৎ
টেলিফোন গায়ক পাখি হয়ে উঠল;
তোমার কণ্ঠস্বর স্পর্শ করল আমাকে, চুম্বনের
স্বাদ পেলাম যেন। তুমি বললে, ‘কী করে থাকব
তোমাকে না দেখে? আমাকে বলে দাও কবি। আমার
কথা মনে কি পড়বে তোমার? কোন্‌ প্রহরে
আমাকে মনে পড়বে?

কিছুক্ষণ নীরবতাকে বইতে দিয়ে বললাম, যদি বলতে
কোন্‌ মুহূর্তে মনে পড়বে না তোমাকে,
তাহলে উত্তর দিতে পারতাম খুব সহজে।
যখন চুলে চালাব চিরুনি মনে পড়বে তোমার কথা;
যখন রবীন্দ্র রচনাবলীর পাতা ওল্টাবো,
তোমাকে মনে পড়বে আমার;
যখন কবিতা লিখতে বসব, তোমার ভাবনা
আমাকে আলিঙ্গন করবে; যখন
গোধূলিবেলা আকাশে পাখির পঙ্‌ক্তি
চোখে পড়বে, তোমার মনে পড়বে; যখন
নির্ঘুম শয্যায় এপাশ ওপাশ করব, কুয়াশাময়
পথের নিস্তব্ধতাকে অনুভব করব, তোমাকে ভাবব।

‘যদি গহন রাতে কালো আলখাল্লা গায়ে চাপিয়ে
হঠাৎ মৃত্যু এসে আমার দিকে
দাবা খেলার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়, তোমার
এই অপটু, অনভিজ্ঞ কবি সেই মহূর্তে তোমাকেই স্মরণ করবে।