তোমার কথাই ঠিক

তোমার কথাই ঠিক আব্বা, তোমার কথাই ঠিক-
আমার সকল বেলা বিফলে গিয়েছে নিশিদিন।
দাঁড়িয়ে রয়েছি একা নিরুপায়, অশ্বেতর আর
গাধার ব্যাপক খুরে হচ্ছে পিষ্ট, হায়, ধ্রুবপদ।

যখন বলতে তুমি, ‘কেন যে ফুজুল দিনরাত
কী ব্যগ্র টেবিলে ঝুঁকে সারি সারি অক্ষর সাজিয়ে
থাকিস বিভোর হয়ে? এই আসমানি সওদায়
কী হাসিল করবিরে পাগলা, ভাবিস? পারবি কি
দুনিয়াকে বদলাতে এতটুকু?’- আমি ভাবতাম
এ বিশ্বের নব্য প্রতিমার কথা, ভাবতাম কত
উজ্জ্বল তোরণ, স্তম্ভ হবে তৈরি নতুন শৈলীর
এবং সে কারুকর্মে আমিও অভীক শিল্পী এক।

আড়াই দশক আমি কবিতার হাত ধরে হেঁটে
জেনেছি রৌদ্রের দিন, সংখ্যাহীন, বৃষ্টি, দীর্ঘপথ।
আব্বা তুমি নেই, আমি আছি, আছে সেই পৃথিবীটা,
যাকে আমি কোনো দিন বদলাতে পারবো না বলে
তুমি হামেশাই স্পষ্ট করতে উল্লেখ উঠোনের
কৃশ চারাগাছটার ঈষৎ কম্পনে চোখ রেখে।

তোমার কথাই ঠিক আব্বা, তোমার কথাই ঠিক-
আমার সকল বেলা বিফলে গিয়েছে নিশিদিন।
পর্দা ওঠে যথারীতি বার বার, কখনও তুমুল
করতালি যায় শোনা, কখনও বা পড়ে পচা ডিম;
আমি শুধু এক কোণে থাকি পড়ে ভূমিকাবিহীন,

ঘোরলাগা ঘণ্টাধ্বনি শুনি। হাহাকার আমার এ
জীবন-যাত্রার মূল গায়েন বস্তুত; বলবো কি
শেষটায় অখুশি আমি, বলা মুশকিল, কিছু হোক
আর না-ই হোক, কথা বলে অজস্র শব্দের সঙ্গে
নিজস্ব আঁধারে আমি অতিশয় বদলে গিয়েছি।