তুমি বড় অসতর্ক

তুমি বড়ো অসতর্ক, বড়ো বেশি অসাবধানী হে।
নইলে কেন দেখতে পেলে না ঝকঝকে সূর্যালোকে
নৌকায় এলাহী ফুটো? কেন ভাঙা নৌকা তড়িঘড়ি
ভাসালে সমুদ্রে? পানি সেচে সেচে মাঝ দরিয়ায়
কী করে টেকাবে নৌকা? ভ্রমণের ঝোঁকে
বলো তো এভাবে কেউ কখনো ভাসায় ভগ্ন তরী
চোখ যার থাকে দূর পল্লবিত সঙ্গীতমুখর কিনারায়?

তুমি বড়ো অসতর্ক, বড়ো বেশি অসাবধনী হে।
ঔদাস্য তোমার সঙ্গী, তবু আশৈশব চেয়েছো আকাশ ছুঁতে
এবং চেয়েছো ছুটে যেতে দূরে আরো দূরে আরো,
পর্বত চূড়ায় পা রাখবে বলে উঠেছো উঁচুতে
অনেক, অথচ পিঠে বাঁধো নি জরুরি সরঞ্জাম।
যে-কোনো মুহূর্তে তুমি পা হড়কে ভয়াল
খাদে পড়ে যেতে পারো,
সারা গায়ে নিয়ে কালঘাম
গড়াতে গড়াতে নিচে হতে পারো বিচূর্ণ কংকাল।

তুমি বড়ো অসতর্ক, বড়ো বেশি অসাবধানী হে।
মায়াবী অরণ্যে তুমি করেছো প্রবেশ যে-বিকেলে
তা এখন ঘোর রাত্রি, সুতীব্র জৈবিক
গন্ধে মোহাচ্ছন্ন চতুর্দিকে।
সেই যে কখন তুমি গেলে,
কর্কশ পাতায় এলোমেলো বাজে শুধু পদধ্বনি;
তুমি তো অক্ষত বেরুনোর মন্ত্র এখনো শেখাওনি।