উজাড় বাগানে

হাওয়ার হাত আমাকে
ঠেলতে-ঠেলতে
দাঁড় করিয়ে দিলো
এক উজাড় বাগানের মুখে।
শুনতে পেলাম না
কোনো পাখির গান, ফুলের
ঘ্রাণ
আমাকে জড়িয়ে ধরেনি বসন্ত
বাহারের তানের ধরনে,
সংলাপের ফিস ফিস পৌঁছেনি
কানে।
নিস্তব্ধতার জিভ আমাকে
লেহন করছে কোমন কোনো
প্রাণীর মতো,
আমার সারা শরীর বুজে
আসে। প্রায় টলতে-টলতে
প্রবেশ করি জনমানব শূন্য
বাগানে; এ কেমন
সাঁঝ আজ নির্জন পথের
গ্রীবায়
লেপ্টে থাকে? সময়ের কাঁধে
ঝুঁকে আছে স্মৃতির
জোনাকিপুঞ্জ

কয়েকটি গাছ দুর্ভিক্ষ পীড়িত
নারীর
কংকাল যেন, ত্রাণের
প্রত্যাশায়
বিশুষ্ক, কাতর। কবেকার
ক’টি শুকনো পাতা কুড়িয়ে
আবার রেখে দিই ঘাসমাটির
চোখের কোটরে। একটি আর্ত
স্বর আমার বুকে ভীষণ
হিম ঝরিয়ে মিলিয়ে যায়
হাওয়ার অন্ধকারে।

বেরিয়ে যেতে চাই বেগানা
বাগানা থেকে,
অথচ আমার পা দুটো অনড়।
গা ঝাড়া দেবো, তার জো
নেই; আমার হাতে
নিরাশার হাতকড়া, পায়ে
মনস্তাপের শেকল। গলা ছেড়ে
গান গাইতে
চাইলাম, কার কর্কশ হাত
চেপে ধরে আমার মুখ।

বাইরে কোথাও আমার জন্যে
অপেক্ষমাণ সুপ্রিয়া কবিতা,
শিরায় অনুভব করি
তার আবছা উপস্থিতি। বেশ
কিছুদিন তার মুখ
দেখি না; প্রাণ জিভের ডগায়
এনে
তাকে ডাকি। হঠাৎ আমার
চারদিকে
কয়েকটি দোয়েল, প্রজাপতি
আর ভ্রমরের চঞ্চলতা।

২০.১১.৯৪