ভাড়াটে

পুরনো ভাড়াটে চলে গেলে কোনো বাসা কোনোদিন
খালি পড়ে থাকে না এখন।
পুনরায় ‘বাড়িভাড়া দেওয়া হইবে’ ফলকটি
বসতে না বসতেই সরে যায়। অন্ধকার
ঘরে আলো জ্বলে, বারান্দায় হেঁটে যায় কেউ কেউ,
জানালায় পর্দা লাগে, শিশুর আনন্দধ্বনি বাজে
মাঝে-মাঝে; ক্যাসেট প্লেয়ারে
রবীন্দ্রনাথের চিরকালীন গহন ব্যাকুলতা।

এখানে সিঁড়িতে আগেকার কেউ যে-কথা বলেছে
প্রায় তারই প্রতিধ্বনি এখন আরেক
কণ্ঠে জাগে। অনেক পুরনো সিন্দুকের ডালা-খোলা
গন্ধময় স্মৃতি ঘোরে আনাচে কানাচে। কার হাসি
সোনালি ঘণ্টার মতো বেজে ওঠে হেমন্ত-বিকেলে?
এখন যে ভায়োলেট-রঙ
শাড়ি পরে সাজাচ্ছে চায়ের সরঞ্জাম;
তার? নাকি আগেকার কারো?

পুরনো দেয়ালে কিছু দাগ জমা হয়, সাঁঝবাতি
জ্বালায় না কেউ;
অন্দরে বেদনা শুয়ে আছে সাবলীল ঘরে-ফেরা
নাবিকের মতো, বয়ে যায় খাওয়ার সময়, তবু
টেবিলে আসে না কেউ। ভোরে
দরজার কাছে এসেছিলো ট্রাক, একটি কি দুটি কাক
ছাদের কার্ণিশে উঠেছিলো ডেকে। কোথায় যে গেলো
ওরা লটবহর-সমেত ধ্বনি-প্রতিধ্বনি রেখে?