ভুল

তাহ’লে কি গোড়াতেই হয়েছিল সুনসান ভুল?
সরল বিশ্বাসের তুমি যাকে
পথ ভেবে করেছিলে যাত্রা তা ছিল গোলকধাঁধা এক,
একদা যে-হাত ছুঁয়ে স্বর্গের প্রবালসিঁড়ি বেয়ে
উঠে গেছ ব’লে
মনে হয়েছিল বার বার,
ছিল না তা’হাত কোনোকালে, ছায়ার প্রসুন নিয়ে
ছিলে মেতে, ওষ্ঠ ভেবে যাতে
করেছো অর্পণ চুমো শতবার, সেসব চুম্বন
হাওয়ায় হারিয়ে গেছে, যেন
অশরীরি কেউ
চেপে ধরেছিল ঠোঁট তোমার সংরক্ত ওষ্ঠতটে।

ব্যর্থ বাসরের রঙ লেগে
থাকে কি আত্মায় চিরকাল? জন্মান্ধ নিঃশব্দ ঝড়
আঁচড় কাটতে থাকে সত্তার দেয়ালে,
স্বৈরিনীর হাসির মতন
আলোর ঝিলিক
আঁধারকে আরো বেশি অনাত্মীয় করে,
কী যেন নিমেষে ভেঙে যায় অকস্মাৎ
হৃদয়ের আবরণ ছিঁড়ে।
ভুল ভেঙে যাবার পরেই
একটু থমকে তুমি দাঁড়ালে যদিও, তবু তুমি
নাওনি বিদায়,-
যেমন মঞ্চের আলো নিভে যাবার পরেও নট
নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে শূন্য স্টেজে বিষন্ন খেয়ালে।

পারোনি ফিরিয়ে নিতে চোখ
চেনা দৃশ্যাবলি থেকে। অন্ধকার সিঁড়ি
আর স্মৃতিখচিত দরজা,
তক্তাপোশ, কার্পেট, মাদুর,
এমনকি সে-ও
ছিল না তোমার, তুমি নিজের ভিতর থেকে একা
বাইরে বেরিয়ে এসে পরাবাস্তবের
সৌহার্দ্যে আপ্লুত হ’লে এবং রাখলে শাদা হাত
সংহারপ্রবণ সেই মরীচিকাশোভন হাতের ছায়াঘুমে।

প্রেমের কাঙাল তুমি, তাই আজো সবচে; সুন্দর
পাঞ্জাবি চাপিয়ে গায়ে, পারফিউমের অন্তরালে
অতিশয় পোড়া
কাঠের মতন অস্তিত্বের গন্ধ চেপে
তার কাছে যাও আর অর্থহীন জেনেও নিবিড়
কথপোকথনে মেতে, কফি খেয়ে, এর ওর দিকে
তাকিয়ে গল্পের রেশ খোঁজো ঘুমপাওয়া মুর্খ বালকের মতো।
প্রেমের কাঙাল তুমি, কখন তুমুল
স্বেচ্ছাচারিতায় উঠে গেছো ভুলে অপ্রেমের শীতল চিতায়।