জামায়াত ও হেফাজতের বন্ধু বিএনপি

রাজনীতিকদের সমস্যা হলো তাঁরা পুরো দেশটিকে ‘হয় আমার না হয় তাঁর’ এই দুই দলে ভাগ করেন। জর্জ ডব্লিউ বুশের সেই দর্শনে তাঁরা বিশ্বাস করেন, ‘যে আমার সঙ্গে নেই সে আমার শত্রু।’ এর মাঝামাঝি কিছু হতে পারে না। ১৮ ও ১৯ মে প্রথম আলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে দুটি লেখা প্রকাশিত হয়। প্রথমটির শিরোনাম ছিল ‘উল্টো পথে আওয়ামী লীগ’, দ্বিতীয়টির ‘গভীর সংকটে বিএনপি।’ প্রথমটি প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষুব্ধ এবং বিএনপির নেতারা পুলকিত হলেও লিখিত প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে দ্বিতীয়টি প্রকাশের পর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান লিখিত প্রতিক্রিয়া জানান এবং ২৬ মে প্রথম আলোতে তা ছাপা হয়। সত্যের খাতিরে তাঁর লেখাটির জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। সংক্ষুব্ধ হয়ে তিনি লিখেছেন ‘এই লেখাটি লেখা হয়েছে বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন ও বর্তমান সরকারের চরম ব্যর্থতাকে আড়াল করার জন্য।’

প্রথমেই বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন। বিএনপি সংকটে আছে এ কথা বলার অর্থ এই নয় যে আওয়ামী লীগ বা মহাজোট সরকার সংকটে নেই। এক অর্থে গোটা বাংলাদেশই সংকটে আছে। না হলে একদিকে রানা প্লাজা এবং অন্যদিকে শাপলা চত্বরের মতো অঘটন ঘটবে কেন?

তবে এ কথাও স্বীকার করতে হবে, আওয়ামী লীগের সমস্যাটি দেশ পরিচালনা তথা প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলাজনিত। পুরোনো সমস্যার সঙ্গে তারা খামোখা কিছু সংকট তৈরি করেছে। কিন্তু বিএনপির সংকটটি আদর্শগত। একদা মধ্য-ডানপন্থী দলটি ডানের দিকে ঝুঁকতে ঝুঁকতে ধর্মীয় মৌলবাদীদের সঙ্গে পার্থক্য প্রায় ঘুচিয়ে ফেলেছে। দলের অনেক নেতা ঘরোয়া আলোচনায় সেসব স্বীকার করলেও প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারছেন না। সবচেয়ে বেকায়দায় আছেন দলের উদারপন্থী অংশের নেতারা, যাঁরা একদা শামসুজ্জামানের মতো ভাসানী ন্যাপ ও জাতীয় ছাত্রদল বিলুপ্ত করে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন।

শামসুজ্জামান তাঁর প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘বিএনপি একটি সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক দল এবং এ দলটি যতবার ক্ষমতায় এসেছে, প্রতিবারই সামনের দরজা দিয়েই এসেছে। কোনো ষড়যন্ত্র বা কারও কাছে কখনোই কোনো দাসখত দিয়ে নয়।’ একেই বলে, ঠাকুরঘরে কে রে, আমি কলা খাই না। আমার লেখায় কোথাও বিএনপি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বলিনি। বিএনপি প্রতিষ্ঠিত ১৯৭৮ সালে। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছেন ১৯৭৫ সালে। বিএনপির নেতারা বলবেন, সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে। মানলাম। কিন্তু জিয়া কীভাবে বিচারপতি সায়েমের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়েছেন, সেটি বিচারপতি নিজেই লিখে গেছেন। জিয়ার সেই ক্ষমতারোহণ সামনের দরজা দিয়ে হয়েছে, বলা যাবে না। একইভাবে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা যদি গণতান্ত্রিক হয়, তাহলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে এরশাদের নির্বাচনকেও জায়েজ করতে হয়।

বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শামসুজ্জামান লিখেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের প্রবর্তনকারী সংগঠনের দুটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো ‘পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই এবং ধর্মীয় নীতির ক্ষেত্রে দলটি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী।’ বিদেশে প্রভু নেই বলেই কি খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সরকারের আমলে ১০ ট্রাক অস্ত্র চালানের ঘটনা ঘটেছিল? যে সরকারের আমলে এ ধরনের অস্ত্রের চালান ঘটে না, সেই সরকারকেই আমরা বিদেশে প্রভু আছে, বন্ধু নেই ধরে নেব?

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিএনপিই বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল, যার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই নির্বাচিত হয়ে রয়েছেন, এ জন্য অনেকের গাত্রদাহ হতেই পারে। তারেক রহমান বর্তমান নেতা নন, তিনি ভবিষ্যৎ নেতা।’ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একটি দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। সেখানে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের বিধান আছে বলে জানা নেই। হ্যাঁ, পৃথিবীর একটি মাত্র দেশে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের বিধান আছে- উত্তর কোরিয়ায়। শামসুজ্জামানেরা কি বাংলাদেশেও সেই বিধান কায়েম করতে চাইছেন? আমরা যতটা জানি, বিগত কাউন্সিলে তাঁকে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে। দলের চেয়ারপারসনের ইচ্ছা ছিল পাকিস্তানের পিপলস পার্টির অনুকরণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার। কিন্তু দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার আপত্তিতে সেটি সম্ভব হয়নি।

শামসুজ্জামান লিখেছেন, ‘তিনি (তারেক রহমান) কখনোই মৌলবাদী বা জঙ্গিগোষ্ঠীকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেননি এবং আওয়ামী লীগই দেশের মানুষকে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের জুজুর ভয় দেখাচ্ছে বিনা কারণে; যার ফলে দেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ তাঁর কথা সত্য ধরে নিলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, কিবরিয়া হত্যা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে হত্যার চেষ্টাসহ ডজন ডজন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাও আওয়ামী লীগের জুজুর ভয়। এগুলো বাস্তবে ঘটেনি। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হয়তো দাবি করবেন, জজ মিয়া নাটক চারদলীয় জোট সাজায়নি, এগুলো আওয়ামী লীগের প্রচারণা।

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে ‘প্রায় অচল’ নেতা বলায় শামসুজ্জামান ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেছেন, তাঁর চেয়েও অচল ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি করেছে। কথাটি আমি বলেছিলাম তাঁর (খোন্দকার দেলোয়ারের) তখনকার শারীরিক অবস্থা বোঝাতে; তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও জ্ঞানবুদ্ধি সম্পর্কে প্রশ্ন করিনি। শামসুজ্জামান লিখেছেন, খোন্দকার দেলোয়ার মইন-ফখরুদ্দীনের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছেন। কিন্তু তিনি মূল প্রশ্নটির জবাব দেননি, খোন্দকার দেলোয়ারের তিরোধানের পর গত দুই বছরেও বিএনপি একজন স্থায়ী মহাসচিব কেন খুঁজে নিতে কিংবা গত চার বছরে কেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা বেছে নিতে পারল না? প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে বিএনপি পূর্বনির্ধারিত জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন বাতিল করেছে বলে নেতাদের দাবি। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের ভারমুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে না পারার কারণেই দলের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নিশ্চয়ই বলবেন না ‘সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক দলে’ স্থায়ী মহাসচিব থাকেন না। তিনি দাবি করেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতিটি বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।’ কিন্তু হেফাজতের সমাবেশের আগের দিন ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম, নেতা-কর্মীদের তথা ঢাকাবাসীকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানোর আগে তিনি কার কার সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন, সেটি জানার অধিকার নিশ্চয়ই দলের নেতা-কর্মীদের আছে।

শামসুজ্জামান আরও লিখেছেন, ‘হেফাজতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে রাতের আঁধারে পৈশাচিকভাবে যে হত্যাকাণ্ড চালানো হলো, এর দায় কার? এর দায় প্রথমত, সরকারের; দ্বিতীয়ত, তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চওয়ালাদের।’

কী অদ্ভুত যুক্তি! প্রথমত, ৫ মে ঢাকাবাসী দেখেছেন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশটি মোটেই শান্তিপূর্ণ ছিল না। দুপুর থেকেই হেফাজতের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, পুরানা পল্টন ও বিজয়নগর এলাকায় ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন, গাড়িতে-দোকানে-ব্যাংকে অগ্নিসংযোগ করে সারা শহরে আতঙ্ক তৈরি করেছেন।

দ্বিতীয় কথা হলো, হেফাজতের ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশে’ সরকার হামলা চালিয়ে থাকলে তার দায় ‘তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চওয়ালারা’ কেন নেবেন? বিএনপির নেতার শব্দচয়ন লক্ষ করুন। তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চওয়ালারা? হেফাজতের আগে এ রকম কোনো বিশেষণ নেই। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তরুণ প্রজন্ম শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ করেছিল। বিএনপি তাদের আন্দোলনের বিরোধিতা করতে পারে এবং করেছেও। বিএনপির নেত্রী তাঁদের সবাইকে নাস্তিক বলে গাল দিতে পারেন এবং দিয়েছেনও। কিন্তু তাই বলে তাঁর উপদেষ্টা আন্দোলনকারীদের তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চওয়ালা বলতে কিংবা হেফাজতের অপকর্মের দায় তাদের ওপর চাপাতে পারেন না।

শামসুজ্জামান লিখেছেন, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বা বেসামরিক কর্মকর্তারা বিএনপি করলে একশ্রেণীর লেখক, বুদ্ধিজীবী ও কলামিস্টের গা জ্বালা করলেও আমলারা ও সামরিক কর্মকর্তারা যখন আওয়ামী লীগ করতে যান, তখন তাঁরাই আহ্লাদে আটখানা হয়ে যান। একসময়ে যাঁরা সরকারি ও সামরিক প্রশাসনে চাকরি করেছেন, তাঁরা কখনোই রাজনীতি করতে পারবেন না, এমন কথা আমরা বলিনি। অবশ্যই পারবেন। প্রশ্নটি হচ্ছে দলীয় চেয়ারপারসন কাদের পরামর্শে চলবেন? তিনি যাঁদের পরামর্শে চলবেন তাঁদেরই দলের নীতিনির্ধারণী কমিটিতে থাকার কথা। দলের স্থায়ী কমিটিকে পাশ কাটিয়ে চেয়ারপারসনের অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাতে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অপমান করা হয় না, দলের গঠনতন্ত্রকেও অবজ্ঞা করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বসার জায়গা না থাকা এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা কর্মকর্তাদের চেয়ারপারসনের অফিসকক্ষে অপেক্ষা করার যে তথ্য প্রথম আলোর লেখায় ছিল, শামসুজ্জামান তার সরাসরি জবাব না দিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি টেনে এনেছেন। তাহলে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বসার জায়গার সঙ্গে চেয়ারপারসনের অফিসের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত? উপদেষ্টা মহোদয় জানালে খুশি হব।

তাঁর শেষ মন্তব্য: ‘গভীর খাদের তলায় নিমজ্জমান সরকারের যখন উঠে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই, তখন তারা নাকি নিজেদের দিকে না তাকিয়ে তাদের তল্পিবাহকদের দিকে বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার খায়েশ পোষণ করছে।’

সাবেক বাম ও বর্তমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী নেতার আশ্চর্য রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। আমি আগের লেখায় দৈনিক নিউ এজ-এর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য তুলে দিয়েছিলাম, যাতে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পাশ কাটিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন কী কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছেন, তার উল্লেখ ছিল। এরপর ঢাকা ট্রিবিউন ২৬ মের সংখ্যায় লিখেছে, নন-পলিটিশিয়ানস ড্যামেজ দ্য বিএনপি’স ইমেজ। ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’ এই প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার পাঁচটি ভুল চিহ্নিত করা হয়েছে: ১. বগুড়ায় সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে নেমে আসার আহ্বান, ২. দলীয় নেতা-কর্মীরা অপ্রস্তুত থাকা অবস্থায় জামায়াতের চাপে বারবার দলীয় নেত্রীর নেতা-কর্মীদের রাজপথে নেমে যাওয়ার আহ্বান, ৩. সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে আসার পর দলীয় নেতাদের অগ্রাহ্য করে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা, ৪. কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অলোচনা না করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম, ৫. হেফাজতের নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতা-কর্মী তথা ঢাকার বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান।

‘গভীর সংকটে বিএনপি’ শিরোনামের লেখায়ও এই বিষয়গুলোর উল্লেখ ছিল। শামসুজ্জামান তার কোনোটির জবাব দেননি। তবে তিনি বা তাঁর নেত্রী বুঝতে না পারলেও বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ঠিকই বুঝতে পেরেছেন, হেফাজত বা জামায়াতের ফাঁদে তাঁদের পা দেওয়া ঠিক হয়নি। ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডব কেবল ওই অরাজনৈতিক সংগঠনটিকেই বিতর্কিত ও বিধ্বস্ত করেনি, বিএনপিকেও রাজনৈতিক ও আদর্শগতভাবে অনেকটা দুর্বল অবস্থায় নিয়ে গেছে।

ডানের দিকে প্রবল ঝোঁক থাকা সত্ত্বেও বৃহত্তর জনগণের প্রত্যাশা বিএনপি গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকারের পক্ষে থাকবে। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্ব উল্টো পথই বেছে নিয়েছেন। এর ফলে বিএনপি তো বটেই, বাংলাদেশও আরেক ধাপ পিছিয়ে গেল।

এতদিন বিএনপির নেতারা নিজেদের জনগণের বন্ধু বলে দাবি করে আসছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে তাঁরা জনগণ নয়, শুধু জামায়াতের ও হেফাজতেরই বন্ধু।

প্রকাশকালঃ মে ৩১, ২০১৩।