অস্তাচল – আয়োজন

(বর্ণনা)

হঠাৎ বুঝি তোমার রথের সাতটি ঘোড়া উঠল
হ্রেষা-রবে চঞ্চল হয়ে, যাবার ডাক শুনি?
অস্তপথ আজ তোমারই প্রত্যাশায় উন্মুখ, হে কবি,
কখন তুমি আসবে?
কবে, কখন তুমি এসে দাঁড়ালে
অস্তপথের সীমানায়, কেউ জানল না; এমন কী
তুমিও না!
একবার ভেবে দেখেছ কি,
হে ভাবুক, তোমার চলমান ঘোড়ার শেষ পদক্ষেপের
আঘাতে কেমন ক্ষত-বিক্ষত হয়ে উঠবে আমাদের
অন্তরলোক?
তোমার রচিত বাণীর মন্দিরে কোন্
নতুন পূজারী আসবে জানি না, তবু তোমার আসন হবে
শূন্য আর তোমার নিত্য-নূতন পূজাপদ্ধতি, অর্ঘ্য-উপচার
আর মন্দিরের বেদী স্পর্শ করবে না। দেউলের ফাটল
দিয়ে কোন্ অশত্থ-তরু চাইবে আকাশ, চাইবে তোমার
মন্দিরে তার প্রতিষ্ঠা, জানি না। তবু একদিন তা
সম্ভব, তুমিও জানো। সেই দিনকার কথা
ভেবে দেখেছ কি, হে দিগন্ত-রবি?
তোমার বেণুতে আজ শেষ সুর কেঁপে উঠল।
তুমি যাবে আমাদের মথিত করে। কোন্ মহাদেশের
কোন্ আসনে হবে তোমার স্থান? বিশ্ববীণার তারে আজ
কোন্ সুর বেজে উঠেছে, জানো? সে তোমারই বিদায়
বেদনায় সকরুণ ওপারের সুর। এই সুরই চিরন্তন,
সত্য এবং শাশ্বত। যুগের পর যুগ যে সুর ধ্বনিত হয়ে
আসছে, আবহমানকালের সেই সুর। সৃষ্টি-সুরের
প্রত্যুত্তর এই সুরের নাম লয়। তান-লয় নিয়ে তোমার
খেলা চলেছে কতকাল, আজ সেই লয়ের তান রণরণিত হচ্ছে
কোন্ অদৃশ্য তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে, জানি না।
কোন্ যুগান্তরের পারেও ধ্বনিত হবে সেই সুর
কতদূর- তা কে জানে।