মেয়েদের জন্য ভুল ছন্দে

তোমাদের জন্য বড় দুঃখ হয়, মেয়েরা, প্রায় দশ বারো বছর
কবিতার রাজ্য থেকে কবির দল উদ্বাস্তু করেছে তোমাদের,
আগে ছিলে স্বপ্নে কিংবা পার্কে কিংবা অন্ধকারে এবং সহস্যে
রাশি রাশি কবিতায় ভঙ্গি দিতে
বাঁদিকের একটা ভাঙা পাঁজরার জানালা দিয়ে হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে
ছোকরা কবিদের প্রাণ নখে ধরতে, সাইরেনের বাঁশিতে ভুলিয়ে
ওদের মগজে বসে নিজেদের রূপশ্ৰীর বন্দনা লেখাতে।
হায়, আজ তোমাদের নিঃসঙ্গ সৌন্দর্যের জন্য বড় দুঃখ হয়।

যদিও সম্প্রতি দেখছি তোমাদের শরীরের বাহার খুলেছে আরও বেশি
চামড়ায় মসৃণ গন্ধ, বুকটুক চমৎকার, দাঁত দেখলে আরও কথা শুনতে
ইচ্ছে হয়
ওষ্ঠাধর ভেজা ভেজা, শীতের দেশের মতো হাসাহাসি পোশাকের নিচে
এসব কিসের জন্য, এই দ্রুত জেগে ওঠা, প্ৰতীক্ষার তীব্র আক্রমণ?
সন্ধের পরেও বাড়ির বাইরে থাকতে পারো, একা একা সব রাস্তা চেনা
বিবাহের আগেই এই পৃথিবীটা ধ্বংস হবে কিনা ঠিক না জেনে
বায়োলজিকাল ফুর্তি করা চলে, সাতজনের সঙ্গে এক সুরে হল্লা করে
অন্তত সাতটি আত্মা নিয়ে খেলা যায়- মনে হয়, ওদিকে যে সাতজন
বদমাইশ
ঊনপঞ্চাশ বায়ু পকেটে ভরেছে, ওরা ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে
রক্ত খাবে, ফাঁকা ঘর পেলেই করবে বিষম গুণ্ডামি
এবং পরের দিন পড়ন্ত বিকেলে আর বকুল গাছের নিচে দাঁড়াবে না।

প্রেমের ভাষায় খুব উন্নতি হয়েছে এই দু’হাজার বছর চর্চায়
না ভেবেই বলা যায় ঝকঝকে, কে আর বিশ্বাস করে ওসব ইয়ার্কি
কবিতার পাগলামি থামেনি যদিও, আজও নাকি যুবকেরা রক্ত দিয়ে
কবিতায় মাতামাতি করে
সেই রক্তে তোমরা নেই, হায় মেয়েরা, তোমরা বিমানে আছো, মন্ত্রীত্বে বা
আদালতে, সিংহাসনে, বিদেশ মিশনে,
এমনকি ঘরেও আছো, সব সময় আশেপাশে খেতে বসতে শুতে
শুধু কবিতায় নেই, আহা, এ কোথায় চলে এলে নিঃসঙ্গ নির্মম নিবার্সনে!