না লেখা কবিতা

কুসুমের বুক থেকে ঝরে গেছে সব পবিত্রতা;
এই লাইনটা নিয়ে মহা মুস্কিলে পড়েছি।
লিখেই মনে পড়ে, না না, আমি বলতে
চাই স্ত্রীলোকের শরীর থেকে সব রূপ উবে গেছে।
কিন্তু এ কথাটা কিভাবে লিখবো বুঝতে না পেরে,
কুসুমের বুক থেকে ঝরে গেছে ইত্যাদি।
তখন মনে হয়-কেন, এভাবে ঘুরিয়ে লিখবো।
কেন, সোজাসুজি লিখবো, আমার কাকে ভয়?
কথাটা কি ভাবে জানাবো ভাবতে বসি।

ভাবতে-ভাবতে ঘুম পায়, মনে পড়ে-
গড়িয়াহাটের ট্রাম লাইনের উপর দিয়ে পেস্বীরা
শেয়ালের গলার বকলশ ধরে বেড়াতে বেরিয়েছি-
কলকাতা এই রকম-এ কথাও লিখতে হবে।
কিন্তু লেখার সময় আসে কুসুম, রূপের বদলে পবিত্রতা।
আমি কুসুম সম্বন্ধে কি জানি? কিছুই না।
পবিত্ৰতা সম্বন্ধেই বা কী জানি? তখন মনে হয়
স্ত্রীলোকের সব রূপ উবে গেছে। তাও কি জানি?
তবে কেন ঘণ্টায় যাট মাইল স্পীডে ছুটে যাওয়া
একটি মেয়ের এক পলক মুখ দেখে এমন প্রেমে পড়ি
যে সাতদিন আহারে রুচি থাকে না? তবে কেন
বেলা বারোটায় একটি মেয়েকে ঘুমোতে দেখে
এমন হঠাৎ অসহ্য কষ্ট হয়েছিল যে মনে হয়েছিল
দীনের চেয়ে দীন হয়ে যাই, একবার হাঁটু মুড়ে ভিখারীর মতো।

ওর হাতের স্পর্শ ভিক্ষে করি। সেইজন্যই কি কবিতাটা
লিখতে গেলেই মনে পড়ে অন্য? নিরীহ কুসুমের প্রতি
অকারণ কপট ক্ৰোধ? এইসব ভাবতে ভাবতে
আমার কিছুই হয় না, বারবার ঘুম আসে।
বরং যদি দুটো নিয়েই লিখতাম। তবে দুটি কবিতা
অন্তত লেখা হতো। না হয় হতোই বা ওরা কন্ট্রাডিকাটারি।
তার বদলে খেলো লজিক আমাকে নিয়ে গেল
মর্মান্তিক নিঃসঙ্গতার দিকে।