নিজস্ব ভাষা
আমি এখনো কোনো পাখির ভাষা জানি না বটে, কিন্তু গাছের ভাষা জানি। এক রকম দু’রকম গাছ নয়, অনেক রকম গাছের।
সুতরাং ইস্টিকুটুম পাখিটির সঙ্গে কথা বলবার জন্য আমি দেবদারু গাছকে অনুবাদক হবার জন্য অনুরোধ করি। আমাদের সংলাপের মধ্যপথে পাশের রাধাচূড়া গাছটি হেসে ওঠে। হাসির কোনো অনুবাদ করবার দরকার হয়না, পাখিটি ও আমি একসঙ্গে বুঝি।
পাখিটি তখন জানালো, যে খবর তুমি গোপনে চেয়েছিলে, তা সর্বজনীন হয়ে গেল। এমন অনুবাদের ভাষায় কথা কইতে গিয়ে আমি আগেও অনেকবার নিরাশ হয়েছি। যেমন, প্রিয় নারীর ভাষা বোঝা কত শক্ত। তার চেয়েও শক্ত তাকে আমার ভাষা বোঝানো। সেই নারী রাজপথকে মনে করে মশারি আর দুঃখকে মনে করে সাঁতার। সেই জন্য আমি পাহাড় ও নদীর সাহায্য চেয়েছি। নদীর ভাষা নারীরা বোঝে, কিন্তু নদীমাত্রই বিশ্বাসঘাতক। নদীও নারীকে চায়। আমার কথা না জানিয়ে নদী সেই নারীকে তার নিজস্ব আকাঙ্ক্ষার কথা জানায়।
পাহাড়েরও পক্ষপাতিত্ব আছে। সে এক নারীর বদলে অন্য নারীর প্রতি উপমা বদল করে। যাকে আমি মরালগ্রীবা বলেছি, তাকে সে মাধবীলতা বলে। একমাত্র বিশ্বাস করা যায় রাত্রির আকাশকে। উদার উন্মুক্ত প্রান্তরে দাঁড়িয়ে। কিন্তু প্রকৃত নিঃসঙ্গ না হলে
সেরকম আকাশ কেউ দেখতে পায়না কখনো।
তাই বলা হয়না, বলা হয়না, কিছুই বলা হয়না!