পিঁপড়ের এপিটাফ

ওপরের ঠোঁট কামড়ে ধরেছে একটা খুদে লাল পিঁপড়ে
সে মাথা বেয়ে নেমে আসে নি, সে পায়ের তলা থেকেও
উঠে আসে নি
সে বাতাসে ছিল, কিংবা নিশ্চিত অন্তরীক্ষে
সমস্ত শরীরে পিঁপড়ে-দংশনযোগ্য কয়েক লক্ষ বিন্দু
তবু কেন সে কামড়ে ধরলো ওষ্ঠটাই
কিংবা সে কেন আমারই মুখে ঢেলে দিতে চাইছে ক্রোধ
বেশ জ্বালা আছে, তাকে হেলাফেলা করা যায় না
এরকম অবস্থায় তাকে আঙুলে তুলে টিপে গুঁড়ো করে ফেলাই তো
স্বাভাবিক, অন্যমনস্ক ভাবে…
সে চলে গেলেও আগুনের একটা ফুল্কি থেকে যায়
একজন আততায়ীর কথা মনে পড়ে, যার ছদ্মবেশ চেনা যায় না
দু’একটা ছেঁড়া চটির মতন অপমান, পরে জিভ-কাটার মতন
ভুল
পানাপুকুরের জলে মেঘলা সূর্যের রশ্মি পড়া রঙের মতন বিস্মৃত
আফশোষ…
একটি পিঁপড়ে যে এক মিনিট আগেও ছিল না, এখনও নেই
যে আকাশ থেকে খসে পড়েছিল, আবার মিলিয়ে গেছে
পঞ্চভূতের ভগ্নাংশে
মাত্র কয়েকটি মুহূর্তে সে তার অবয়বের কোটি গুণ মনোযোগ
কেড়ে নিয়ে গেল
একই জায়গায় বসে থাকা আমি সেইটুকু সময়ে অন্য মানুষ,
তুলে নিই কলম
মানুষের ঠোঁট কামড়ে ধরা প্রায় অদৃশ্য একটি পিঁপড়ের ছবি
কোনো শিল্পী কোনোদিন আঁকবেন না
তাই লিখে রাখা হলো এই কয়েকটি লাইন…