রাত্রির বর্ণনা

সম্রাজ্ঞী বাইরে আছেন, শেষ রাত্ৰে গোপনে ফিরবেন
দ্বার খুলে দিও রক্ষী, ঘুমের অপর নাম মৃত্যু, মনে রেখো।
ততক্ষণ দাসীদের সঙ্গে কিছু মস্করায় সময় কাটাতে পারো হয়তো,
রূপসী রমণীদের সব দিতে পারো, শুধু দৃষ্টি বাঁধা দিও না ক্ষণেকও।

পৃথিবী দেওয়ালে ক্ষুদ্র,গুমরে ওঠে বন্দিশালা, কিন্তু দেখো
চোখের তারায়
একটি সহস্রদল নীল পদ্ম ফুটে আছে, রাত্রির আকাশ–
অথবা সমুদ্ৰ বুঝি সহস্র মন্দার পুষ্পে, প্রতীক্ষায়, সজ্জিত রয়েছে
একটি দেবদারু বৃক্ষ চিরকাল একা থেকে শুষে নিচ্ছে পৃথিবীর সুচারু নিশ্বাস।

প্ৰহরের ঘণ্টা বাজে, হে প্রহরী, রক্তের গমন ধ্বনি কখনো
শুনেছো?
যারা ঘুমে ঢলে আছে, তারা সব মৃত-রক্তে,
অন্ধকারে মগ্ন থেকে যাবে
তিন বেদনার দীক্ষা নিঃস্ব বাদুড়ের মতো শূন্যপথে দিয়ে যাবে
নির্লিপ্ত ত্রিকাল
তোমার ললাট জ্বলবে নীল শিখায়, দুই চক্ষের রহস্যের
অন্তরাল পাবে।

সম্রাজ্ঞী বাইরে আছেন, শোনো রক্ষী, খুলে দিতে হবে সিংহদ্বার
তঞ্চক ইন্দ্ৰিয়বর্গ যেন না লুকায় ইতস্তত
জীবনের ধৃতি-রূপ তিনটি আদিম দুঃখে শস্ত্ৰপাণি হয়ে থেকে তুমি
অকস্মাৎ বুঝতে পারবে সব পদপাত শব্দ, শোণিত প্রবাহ অন্তৰ্গত।