শেষ যাত্রী

শেষ ট্রেন ছেড়ে গেছে, এখন এ প্ল্যাটফর্মে আমরা সকলে
হাঁটু গুজে বসে থাকবো, সারারাত আলো জ্বলবে স্থির
শ্মশানযাত্রীর মতো ঘুমচোখে কালহরণের খুব শান্ত কৌতূহলে
কম্বলে শরীর মুড়ে আমরা সব বসে আছি অস্পষ্ট, গম্ভীর।

শেষ ট্রেনে কারা গেল? আমাদেরই মাসতুতো ও পিসতুতো ভায়েরা,
রাত্রির পোশাক পরে বাঙ্কে চেপে এতক্ষণে ঘুমুচ্ছে আরামে
চিরকাল ঘড়ি বেঁধে ঠিক-ঠিক ট্রেনে চেপে মহা সুখে চলে যাবে এরা
পৃথিবীর সব দ্রব্য অনেক যাচাই করে কিনে নেবে ঠিক-ঠিক দামে।

আমরা সব কটা ট্রেন ছেড়ে দিয়ে প্রতিদিন প্ল্যাটফর্মে থাকবো এ-ক’জন
পাখির নখের মতো–উপমায় বলতে গেলে–গায়ে বেঁধে শীতের বাতাস,
ঘুরঘুরে পোকার মতো হকারেরা একে-একে লাভের হিসেবে দেয় মন
শহরের গৃহস্থেরা রাত্রির পরম ব্ৰত এই প্রহরে মানবে বারোমাস।

স্টেশনের কিছু দূরে ব্রিজ, তার নিচে এক রাত্রি-জাগা নদী
শীতল নিশ্বাস নেয়,
আমারও বুকের মধ্যে অন্ধকার জল–
আহা ঠিক এ-সময়ে এক ভাঁড় চা পেতাম যদি!

পাওয়া গেল, টাকার খুচরোয় কিছু ঘাটতি হলো, দু’তিনটে অচল।