নারী ২

কোমল কুমারী নারী শরমে আনত মুখ বিবাহের দিন
অজানা সুখের ভয়ে নীলাভ শরীর কাঁপে কী জানি কী হয়।
সানায়ের সুর শেষ, রাত বাড়ে, বধূটির কণ্ঠ হয় ক্ষীণ
পুরুষ প্রথম এসে নিঃশব্দ নির্জন ঘরে কী কথা যে কয়!

দেবতা নামক স্বামী লাগায়ে দোরের খিল বক্র চোখে দেখে
লােভনীয় মাংসময় অনাঘ্রাতা বালিকার সলজ্জ শরীর।
বহু দেহ বহুবার উন্মােচিত করেছে সে নিষিদ্ধ পল্লীর
অভ্যস্ত হাতের কালি নারীর কপাল জুড়ে ভাগ্যখানি লেখে।

অবুঝ কিশােরী মেয়ে, স্বপ্নসাধ ভাঙে তার, দুঃখে বাঁধে বুক
এ রকমই বুঝি হয়, পৃথিবীর এ রকমই নিয়ম-কানুন।
পিশাচী উল্লাস করে নিষ্পেষিত দেহমনে বাসনার খুন
পরম সােহগে বধূ উপহার নিল অঙ্গে নিষিদ্ধ অসুখ।

বছর পেরােলে নারী বিকলাঙ্গ শিশু এক করল প্রসব
জটিল রােগের বিষ, আগুন জ্বালিয়ে দেহে স্বাগত জানায়।
সিফিলিস রােগ নাম, রক্তের প্রপাত বেয়ে বসত বানায়
সুচারু শুভ্রতা ছেঁড়ে, বিষাক্ত নখরে ছেঁড়ে হাড় মাংস সব!

রাত্রির হিংস্রতা এসে জীবনের সূর্য খেয়ে নেভায় সকাল
দুরারােগ্য কালাে পাপ অকালে নারীকে শুষে কেড়ে নেয় আয়ু
অবশ হাত পা মেলে পড়ে থাকে বােবা কালা জর্জরিত স্নায়ু
‘আছড় করেছে জিনে’— এমন কথাই লােকে জানে চিরকাল।

(গ্রন্থঃ শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা)