যৌবসেনা

মরুর বাতাসে ঝোড়ো এলোচুল
আকাশে বাতাসে ধ্বনিছে তার
আগমনী পদ-ধ্বনি চটুল
প্রিয়-বাঞ্ছিত অত্যাচার!

দূর দিগন্ত মরীচিকা ছায়া দোলে
বালু সৈকতে বিহঙ্গ নির্ভয়
শিকারী পাখীর আঁখিতেও বিস্ময়
উড়িতে পারে না, আকাশের পথ ভোলে।

তরল শোণিতে তপ্ত প্রদাহ জ্বলে
মদির ফেনায় ধমনীতে উচ্ছলে
শিরায় শিরায় উষ্ণ সংক্রামক
রক্তেই তার লোভ সে মারাত্মক।

কামনার বিষ লাল তার চোখে মাখা
ক্রূর দৃষ্টির হাজার শিখায় বাঁধে
তৃপ্ত নহে সে, সোনালি ভোগলিপ্সাতে
আজীবন তাই দেহ মন তার কাঁদে।

পায়ের তলায় মরুভূমি হ’ল লীন,
বালু সমুদ্র উদ্দাম অস্থির
নিশ্বাস ফেলে চ’লেছে দীর্ঘ দিন
মরু সাগরের অশান্তি ওঠে জাগি
রুক্ষ আঁখিতে সহসা ঘনায় নীর।

হে বিজয়ী বীর! অধীর চিত্তে জ্বলে
আমারো অমনি শিকারীর মত নেশা,
শুনি যেন কোন চতুম্পদের হ্রেষা
বল্লমখানি আঁকড়িতে চাই বলে!
আমারে কি দেবে দীক্ষা তোমার মন্ত্রণায়
যাযাবর বেদুইন!
যাত্রা করিব দিগন্ত ধরি পথ সন্ধান-হীন
ভাঙিব গোধূলি-তন্দ্রা ধরার মরু ধুলায়।

তবে তুমি শোনো- আমি সেই অতীতের
পশুর শোণিত শিরায় শিরায় বহি
উদ্ধত মূক বুকের বেদনা সহি
আবার জাগিব এই মোর প্রার্থনা।

যে বন-ভুজগ ক্রমে হ’য়ে তীক্ষ্ণধী
অনায়াসে পার হয়ে গেল গিরি নদী,
বহুদিন পরে বৃদ্ধ সে অজগর
পশ্চাতে শুনি আহ্বান মৃদুতর
ফিরে যেতে চায় আদিম প্রাণের টানে।
রক্তে আমার পথ চলিবার নেশা
পথ খুঁজি তাই অন্ধের সন্ধানে।।