আষাঢ়

আষাঢ় হ’ল আসন্ন আজ আকাশতলে,
সেই কথাটা বল্বে বলে চোখের জলে;-
যে কথা তার ব্যথার মত বুকের ‘পরে
রয়েছে আজ নিড়ি হয়ে বরষ ধরে’!

কার বিরহের বেদনাতে বচনহারা,
কিসের লাগি বুক-ফাটা এ নয়নধারা!
দিনে-রাতে অপাতে দীর্ঘশ্বাসে
যায় না ঝরে’- এমন কঠিন কোন্ ব্যথা সে!

মনের কথা বল্তে চাহে, ভাষা নাহি-
আঁধার মুখে তাই সে কেবল আছে চাহি’;
বলতে গিয়ে তবু যে সে বল্তে নারে,-
তাইতে আরো ভেঙ্গে পড়ে নয়নধারে!

পারুক কিংবা বল্তে নাহি পারুক বা তা’,
মুখ দেখে’ তার মলিন ধরা নোয়ায় মাথা;
মেঘে মেঘে গুমরে ছুটে গুরু-গুরু,
আকাশ পরে ঘনিয়ে উঠে কালো ভুরু!

নীপের শাখা শিউরে’ উঠে ফুলে-ফুলে,
নদীর বারি ডুক্রে’ ছুটে কূলে কূলে;
দিনের আলো নিবায়, ভেবে- হ’ল কি যে,’-
বনের চোখে শুক্নো পাতা উঠে ভিজে!

এই যে ব্যথা, এই বেদনা ভাষাতীত-
প্রাণের মাঝে প্রাণ দিয়ে তা জেনেছি ত!
তবু আমি বুঝতে যে পার্ছি না তা-
আষাঢ় সাথে কেন ভিজে আঁখির পাতা।