নাগকেশর

চিত্ততলে যে নাগবালা ছড়িয়ে-ছিড়ে কেশের কেশর কাঁদছে-
অফুরন্ত অশ্রুধারায় সহস্রবার নাসার বেশর বাঁধছে;
মানিকহারা পাগলপারা যে বেদনা বাজ্‌ছে তাহার বক্ষে,
পলে-পলে পলক বেয়ে অলক ছেয়ে ঝরছে যাহা চক্ষে;
দুঃখে-ভাঙা বক্ষে যাহা নিশ্বসিয়া সকাল-সাঁঝে টুটছে-
মহাকালের সোপানতলে নাগকেশরের ফুল হয়ে তাই ফুটছে।

মনপাতালে যে নাগবালা রতন-জ্বালা কক্ষে বসে হাসছে-
দীপ্তি যাহার নেত্রপথে শুভ্র-শুচি দৃষ্টি হয়ে আসছে;
মুক্তামানিক সবার মাঝে বিলিয়ে দিয়ে উল্লাসে যে চঞ্চল,
উদ্বেলিত সিন্ধুসম দুলছে যাহার উচ্ছসিত অঞ্চল;
বিশ্বভুবন পূর্ণ করে যে আনন্দ শঙ্খস্বরে উঠছে-
মহাকালের সোপানতলে নাগকেশরের ফুল হয় তাই ফুটছে!

তাই দিয়ে আজ পূজব তোমায় ভস্মভূষণ হে আশুতোষ ব্যোমকেশ!
নাগকেশরের অর্ঘ্যে আজি কর হে শিব অক্ষি তব উন্মেষ।
দুঃখ-সুখের বক্ষে পড়ুক উদার তব চন্দ্রকলার দীপ্তি,
জটাজালের ঝাপটা লেগে অশ্রুজলের তর্পণে হোক তৃপ্তি।
নাগ যে তোমার কণ্ঠভূষা, কেশর তব আষাঢ়-মেঘের কান্তি;
প্রসাদী-ফুল নাগকেশরে ছড়িয়ে দিলাম- শিবের প্রসাদ শান্তি।