নিঝুম-রাণী

আমি রাতভিখিরী নিত্যি ফিরি নিঝুম-রাণীর দরবারে-
পাগল মনের খোস্ খেয়ালের দরকারে;
হাত বাড়িয়ে নাইক কোন ধন চাওয়া,
মুখ ভরিয়ে নাইক কারো মন পাওয়া-
দাবী-দাওয়া নাই কিছু সে সরকারে!

থাকে থাকুক চাঁদ আকাশে, তারার আলো- নয়ত নয়,
সন্ধ্যা থেকেই অন্ধ আকাশ হয়ত হয়;
রাত্রি-দেবীর ছত্রতলের কোণ্টিতে,
জোনাই জ্বলে শুধু পাশের বনটিতে;
হইনা একা- নাইক কোন ভাব্নাভয়।

আমি চলি আপন মনে রাণীর গোপন সন্ধানে,
সন্ধ্যা হলেই সে যে আমার মন টানে;
তার সে ডাকের নাইক ভাষা কিছুরে,
আঁধার সাথে বসে সে যে চিৎ যুড়ে’;
খুঁজে’ বেড়াই কোন্খানে রে কোন্খানে।

দিবালোকের বেড়ার শেষে, কোলাহলের আড়্পারে-
ঠেলাঠেলির রংমহলের বা’র-দ্বারে-
শূন্যে ছাওয়া অনন্ত তার মন্দিরে
ঘুরে’ বেড়াই গোলকধাঁধায় বন্দী রে-
কোথায় রাণী- হাৎড়ে বেড়াই চারধারে।

ফুলের গন্ধ ইঙ্গিতে সে হঠাৎ বলে- এইখানে!
কোন্খানে তা মনে-মনে সেই জানে;
তারার আলো মাথার উপর কয় হেসে-
ওখানে নয়, এই খানেতে রয় যে সে-
হাওয়া বলে- কারু কথার নেই মানে!

দাতার দেখা নাইক তবু দানে যে তার মন ভরে,
নিতি রাতে পাই সাড়া তার অন্তরে;
মানুষটাকে আড়াল করে’ সর্ব্বদা
তৃপ্তি বিলায় কে যেন রে সর্ব্বথা-
শান্তি দিয়া নীরবতার মন্তরে।

নিঝুম-রাণী চুপটি করে’ হাসে মোহন ভঙ্গীতে,
নিশীথরাতের নীরব নিথর সঙ্গীতে;
যে সঙ্গীতে ফুল ফুটে আর চাঁদ উঠে,
যে সঙ্গীতে মলয় হাওয়ার বাঁধ টুটে-
সীমা চাহে সীমার বাঁধন লঙ্ঘিতে।