কতোদিন শুনি না তোমার কণ্ঠ

কতোদিন হয় শুনি না তোমার কণ্ঠ, মনে হয়
নৈঃশব্দ্য আমাকে ডাকে তোমার মায়াবী কণ্ঠস্বরে,
ভোরের পাখির শব্দে শুনি আমি তোমার মদির কণ্ঠ
স্থির হয়ে থাকা টেলিফোন বুঝি তোমারই প্রগাঢ় ডাক।
কী হলো আমার আমি আর কোথাও শুনি না কিছু
নৈঃশব্দের বুক ভেদ করে ফুট ওঠে সেই গাঢ় ধ্বনি,
নদীর কল্লোল হয়ে তোমার কণ্ঠই ফিরে আসে
ফিরে আসে পাখির প্রতিটি শিসে, পাতার মর্মরে।
হরিণের ক্ষিপ্র পদচারণার ধ্বনি সেও যেন
তোমারই নিঃশ্বাস বয়ে আনে, বাতাসে তোমারই ঘ্রাণ,
সুন্দরবনের অনন্ত সবুজ হয়ে যেন আসে
ভেসে ভেসে তোমারই মুধর কণ্ঠস্বর সারাবেলা;
আমার করার কিছু নেই, কোথাও শুনি না কিছু
যেখানেই কান পাতি বেজে ওঠে তোমার কিন্নর কণ্ঠ।
কে যেন রেখেছে খুলে তোমার সুরেলা গ্রামােফোন
বাজায় এ কোন বাঁশি কে বললা আমার কানে কানে,
আমার বুকের মধ্যে কে বলো রেখেছে গেঁথে এই স্বর
নিঃশব্দ প্রকৃতি জুড়ে অন্তহীন টেপরেকর্ডার।
কতোদিন হয় শুনি না তোমার কণ্ঠ, মনে হয়
এক কোটি বছর রয়েছো তুমি যেন শব্দহীন,
তবুও তোমারই কণ্ঠস্বর যেন এই বেজে যায়
নদীর ধারায়, পাখিদের গানে, স্তব্ধ টেলিফোনে,
যেন গহীন শব্দের মধ্যে আমি ডুবে যেতে থাকি
সেখানে কেবল তোমার কণ্ঠ ছাড়া শুনি না কিছুই;
এই স্বপ্নলোকে প্রত্যহ তোমার কণ্ঠে সেই গান
পৃথিবীর প্রথম নদীর মতো বুঝি বয়ে যায়।

১৮.৩.৯৮