ছুটি

দাও-না ছুটি,
কেমন করে বুঝিয়ে বলি
কোন্খানে।
যেখানে ওই শিরীষবনের গন্ধপথে
মৌমাছিদের কাঁপছে ডানা সারাবেলা।
যেখানেতে মেঘ-ভাসা ওই সুদূরতা,
জলের প্রলাপ যেখানে প্রাণ উদাস করে
সন্ধ্যাতারা ওঠার মুখে,
যেখানে সব প্রশ্ন গেছে থেমে-
শূন্য ঘরে অতীত স্মৃতি গুন্গুনিয়ে
ঘুম ভাঙিয়ে রাখে না আর বাদলরাতে।
যেখানে এই মন
গোরুচরা মাঠের মধ্যে স্তব্ধ বটের মতো
গাঁয়ে-চলা পথের পাশে।
কেউ বা এসে প্রহরখানেক বসে তলায়,
পা ছড়িয়ে কেউ বা বাজায় বাঁশি,
নববধূর পাল্কিখানা নামিয়ে রাখে
ক্লান্ত দুই পহরে;
কৃষ্ণ-একাদশীর রাতে
ছায়ার সঙ্গে ঝিল্লিরবে জড়িয়ে পড়ে
চাঁদের শীর্ণ আলো।
যাওয়া-আসার স্রোত বহে যায় দিনে রাতে-
ধরে-রাখার নাই কোনো আগ্রহ,
দূরে রাখার নাই তো অভিমান।
রাতের তারা স্বপ্নপ্রদীপখানি
ভোরের আলোয় ভাসিয়ে দিয়ে
যায় চলে, তার দেয় না ঠিকানা।

৩১ ভাদ্র, ১৩৩৯