আলোছায়া

পশ্চাতে কাঁদে মোর ভীরু ভালবাসা,
সম্মুখে ডাকিছে নতুন আশা।
ঝংকার সুর রেশ মিলায়ে যেতে,
চাহিহে হৃদয়ে তারে লইতে গেঁথে।
নতুন কুসুমকলি কর ইশারায়,
তাহার মাঝে আজি বাঁধিবারে চায়।
কাহারে বাধিব প্রানে?
যে হাসে সেই আসে ভেসে যায় বানে।
কাহার লাগিয়া রচি বাসা এইখানে,
কিছুই রহে না এই আর্শি মনে।
চলো সম্মুখে চেওনা ফিরিয়া পিছে,
অতীত যাহা তা সকলি মিছে।
অতীত বৃন্ত রচে বর্তমান ফুল,
ভবিষ্যৎ দাঁড়ায়ে দুয়ারে গাঁথিছে গো ভুল।
নহে ভুল- ফুল হয়ে ঘ্রান লয়ে হৃদয়ে বাঁধিবে বাসা,
নতুন আসিছে লয়ে স্বপন আশা।
ভুল যাহা- ভুলই যাহা
ফুল তাহা কভু নয়,
বনতলে ঝরা যাহা
বুনো পথে রয়।
ফুল হাসে ভুল লয়ে
ঝরে যায় তাই,
অতীতের মাঝে আমি লুটাইতে চাই।

অতীত বাঁধিয়া পাশে
যে জন মধুরে হাসে
সমুখে কে তারে কালো যমুনা,
ব্যর্থ কুজনে রবে আশা কামনা।
অতীত যাহা থাক
ভাসিয়া যাহা যাক
সমুখে বাড়াও বাহু,

আশার তরনী বেয়ে
কালের সাগর ছেয়ে
ওপারের তীরে, ভাসাও শালতি নদে ধীরে।

পেছনে কাঁদিবে মায়া,
ডাকিবে শ্যাম বনছায়া,
তবু ছাড় নাওখানি,
উজান স্রোতধারা সজোরে টানি।
অতীত বুকে লয়ে
সমুখের গীতি গেয়ে
বীনা বাঁধ সুরে,
এ ধারা রচিয়া গেছে তটিনীর তীরে।

২ রা বৈশাখ, ১৩৭৯, লালবাগ, ঢাকা।