বহ্নি

হে সর্বগ্রাসী বুভুক্ষু দাবানল
তোমার তরে আর পুজার অর্ঘ্য নয়,
নও তুমি আর দেবতা খল

দেবদূতের পথ চেয়ে আর থাকা নয়।
দেবর বেশে তুমি পারবেনা-
পারবেনা আমার উন্নত মস্তক নত করতে,
আমার সঙ্কীত বক্ষে তোমার বিষ দংশনে
আমি ভীতু নই দেবতার প্রাচীন সংস্কারে,
আমি বন্দী নই সমাজের অন্ধ কারাগারে।

আমার অবাধ্যতা তোমায় টেনে আনবে
নির্মম নিষ্ঠুরের মত আমি আসবো
আমার পর্নকুটিরখানা তোমার আক্রোশে,
মিশে যাবে ধুলোয়। আমার পাণ্ডুলিপিখানা
বুকে বলাকার মত মিশে যাবে আকাশে।
আমার পোড় ক্ষত ভয়ঙ্কর দেহটা হঠাৎ
হারিয়ে যাবে ঘুনি বলয়ের তলে।
ভাটি আসবে আবার ক্রোধ অশ্রুজলে।।

তবু, শুধু আমি থাকব চিরদিন,
এ মাটির প্রতিটি ঘাসের ডগায় জমে থাকা
শিশির কনিকার মাঝে।
হেথা বনানীর শাখে শাখে ডাকা
পাপিয়া কপোতীর সুরে
তরী-বাঁধা খেয়াঘাট এ নদীর তীরে।
আমি থাকব, আমি বেঁচে রব
তাই তোমার রক্তজিহ্বা দেখে
আর উঠিনা আতঙ্কে কেঁপে।
তোমায় জানাই অনুখন,
এ মোহে হে বহ্নি কালনল।
তুমি এস প্রচণ্ড উল্লাসে,
আমায় শেষ করে দাও- পরিসমাপ্তির
গণ্ডী আমায় হেনে।
পরিসীমান্তের সীমা থেকে আমায়
নিয়ে যাবে টেনে,
পরিপূর্নতার এক অলৌকিক অধ্যায়ে।

আমি তারই প্রত্যাশী, তোমরা যাকে
প্রলয় বলে নমস্কার কর শতবার,
তোমরা যাকে দেবতা সম্ভাষনে
উৎসর্গ কর সন্ধ্যা আরতি।
আমি তারই প্রত্যাশী তোমরা যাকে বলো
যমদূত কাল বীভৎস মূর্তি।
আমি তাকে করি আহবান
তার ভয়ংকর মূর্তি দেখব বলে।
হে বহ্নি! এসো তুমি তোমার প্রচণ্ডতা নিয়ে,
ধ্বংসের মাঝেই সৃষ্টি করে নতুন।
কারন অতীত ধবংস না হলে
স্থান পাবে না নবীন।
ভয়ংকর! আর একবার তোমার অট্টহাসি হেসে
কাঁপিয়ে দাও এই ধরিত্রী; দারুন ত্রাসে।