চোখ খুলে ফ্যালো

চোখ থেকে খুলে ফ্যালো চোখ,
দ্যাখো এখন কী চমৎকার লাগছে তোমাকে!

কিছুই দেখতে না তোমার
উপড়ানো চোখ দুটি ছাড়া,
চোখের কোটর এবং তার রক্তমাখা ক্ষত
কি এমন বীভৎস বা ভয়ানক বলো!

এখন তোমাকে আর দেখতে হচ্ছে না
দৃশ্যমান কিছু-
মেঘ কিংবা পাখিদের ঝাঁক
কখনো দ্যাখোনি তুমি,
পুর্নিমার পরদিন আগুন-রঙের ঠাণ্ডা চাঁদ
অথবা স্রোতের পরে ভাসমান
রাতে নুনের জোনাকি
দেখতে হয়নি কোনদিন তুমি বা তোমাকে।

তুমি তো দেখেছো
রক্ত-ঝলকানো নারীর স্তনের ‘পরে
মিষ্টি গোলাপি তিলের টিপ,
স্নায়ু তছনছ করা উরু,
আর কোমরের নগ্ন নদীময় বাঁক।

তুমি তো পেয়েছে কেবলই সুরার সৌরভ,
নেবুগন্ধ নারীর ত্রিভুজ
আর অবিরল শারীরিক উলঙ্গ উৎসব।
কেবল তোমার চোখে সেঁটে ছিলো
কাড়ি কাড়ি টাকার বাণ্ডিল,

ক্ষমতার মসৃন পিচ্ছিল এক সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে
তুমি তো পৌঁছেছো
নরকের নিসঙ্গতা-মাখা সোনালি চুড়ায়।

তীক্ষ্ণ তৃষ্ণাময় দীপ্ত সুচতুর তোমার দুচোখ,
এইসব আলোকিত অন্ধকার ছাড়া
কিইবা দেখেছে আর!

অতএব চোখ থেকে খুলে ফ্যালো
তোমার দুচোখ,
অন্যথায় অন্য এক চাকু এসে
খুঁচে খুঁচে রক্তাক্ত করবে

এবং তারপর
উপড়ানো চোখ দুটি ছুঁড়ে দেবে
ক্ষুধার্ত কাক বা কুকুরের লকলকে জিভের সামনে।।

২৪.১০.১৩৯৪ মোংলা বন্দর।