ক্রমবর্ধমান সমস্যায় জ্বর এবং কলকাতা

হে কলকাতা
জীবনের সমস্ত জিজ্ঞাসা
যেখানে সহসা এসে
হারিয়ে গিয়েছে পথ
সেখানে আজো তুমি
মৃত পাথরের মতো
নির্বাক হয়ে আছে কেন

হে কলকাতা
হে বিলাসী নগরী
তুমি কি সতীত্ব হারিয়েছে
তুমি কি অসতী মাতা?

জারজ সন্তান বুকে
যে মাতা সতর্ক চোখে
হাঁটে দুশ্চিন্তায়
তুমি কি তারি মতো
ভূগছো হতাশার জ্বরে
হে কলকাতা

তুমি কি সতীত্ব হারিয়েছো
তুমি কি অসতী মাতা?

কালো রাত্রি নেমে আসে
কাঁচের চকচকে গ্লাসে
রঙিন জলের ভেতর
উর্বশী রমনীর বুকে
ক্রমশ নাচে উন্মত্ত ঢেউ
পোড়া যৌবনের
জীবিকার দুরন্ত জিজ্ঞাসা
হে কলকাতা তুমিও কি
ওদেরই মতো
একরাশ ক্ষুধার রাজ্যে
চুর হয়ে আছো
সুমার্জিত মুখোশের যন্ত্রনা
বাড়ছে ধিরে
অন্তঃস্বত্বা রমনীর ক্রমবর্ধমান
উদরের মতো
এ অবৈধ ভ্রূণের কখনো
হবে নাকি প্রসব
হে কলকাতা
এ প্রসব যাতনা
কত দিন
কত রাত্রি
তোমার উত্তপ্ত যোনির মাঝে
মাথা কুটে মরবে

হে কলকাতা
তুমি কি অবৈধচারিনী
তুমি কি আজীবন সমস্যায় অন্তঃসত্ত্বা

(১৫.১০.১৯৭৩)