মহাকাব্য

মহাকাব্য, তুমিতো নও আমার;
আমরা যারা অনাথ নিরাশ্রয়।
তোমার বুকে আমাদের ঠাঁই কভূ আর
হবে না,- হয়নি। পরাশ্রয়
যাদের সম্বল তারা কি কখনও হতে পারে
মহাকাব্যের নায়ক কিম্বা নায়িকা।
তাদের যে জীবন-স্রোতটা অনির্দিষ্ট বাঁকা,
নক্ষত্র ভরা অম্বর হতে খসে পড়া
হতভাগ্য তারার মত অসম্পূর্ন।
ছিন্নমূল বির্টপির মত অসহায়
যারা তারা কি পায় আশ্রয়
তোমার সুবিন্যস্ত সুগন্ধি মুকুরে
হে মহাকাব্য যুগের স্বাক্ষরে?

যাদের দু’মুঠো অন্নের তরে
ঘুরতে হয় প্রত্যেকের দ্বারে,
সমস্ত দিন ধরে-
তার সময় কোথায় মনোর
সুলালিত্য সংগীত পরিবেশনের।

তবুও আশা তো মেঘের মতো জমে ওঠে
ধীরে ধীরে, আবির মাখা আকাশের দুই ঠোঁটে।
কিন্তু হঠাৎ উত্তর হতে প্রবাহিত
নিসংকোচ মলয়ী গন্ধ বহে
জমে ওঠা মেঘে আসে নিয়তির ভাঙন,
মিলিয়ে যায় সকল অনিমেষ নিঃশেষে।
ঠিক যেমন করে কৈশোরের খেলাঘর ছেড়ে
কিশোরী চলে যায় যৌবনের গৃহে
মাটির খেলার সামগ্ৰীগুলো ফেলে।
ঠিক যেমনি পাতি হাস ঝাঁক
পুকুরে চরতে চরতে নালা পথে
কখন এসে পৌঁছে সুগভীর খালে,
নিজস্ব মনের একান্ত ভুলে।

আমাদের জীবন কাহিনী হয় না
‘মেঘদূত’ ‘মহাশ্মশান’ কিম্বা ‘মেঘনাদবধ’
অরন্যই হয় জীবন দীপখানার অবসান।
তবুও ইচ্ছে হয় নায়ক কিম্বা নায়িকা হতে
মহাকাব্যের নাইবা হলো, পথে
অথবা ফুটপাতের পাশে
ছড়িয়ে থাকা দোকানের মত স্থানে
চটকদারী ছবিওয়ালা বইএর
ক’একটা পৃষ্ঠাব্যাপী থাকবে
আমাদের অবহেলিত জীবনের

কয়েকখানা ঘুনে ধরা গান।
নাইবা হলো তার মহাকাব্যে স্থান।