রাতের নটির চুলে মানুষগুলো

রাতের দারুন নটি বোসে আছে আমার টেবিলে
এ শহরে আজ আর ঘুমোবে না কেউ।
একশো মদ্য মাতাল রাজপথে গ্রীনলেনে
বিষ্ণুচরন স্ট্রীটে সদরঘাটে সর্বত্র শুধু
ব্রোথেল খুঁজে খুঁজে ব্যর্থ হবে-
মানুষগুলো আজ আর ঘুমোবে না কেউ।

সে শুধু একটিবারই দরোজা খুলে
বোলেছিলে এসো- আমি দ্রুত ধাবমান
রিকশার ভেতর দেখলাম তাকে, পরিচিত মুখ
কড় কড়ে দুখানা মূল্যবান কাগজ তুলে দিলে
তুমি চলে এলে আমার বশে একান্ত বাধ্যগত
গৃহিনীর মতো। আমি অনায়াসে কাটালাম রাত
সুখের নিদ্রাহীনতায়।

জানি ভোর হোলেই তুমি আমাকে চিনবে না
আর চিনবো না আমিও।

এ শহরে কেউই ঘুমোয়নি কোনোদিন
মগজে তরল দুঃশ্চিন্তা ঢেলে দেখেছো ক্যামোন
ওরা সকলেই জেগে আছে সোনিয়া লায়লা
সাবুর বাবা ফুলজান ওরা ঘুমোয় না কেউ
যেতে যেতে যাই, যেতে যেতে ভাবি এবং যাই
এ শহর সরাসরি ঘুমের বিরুদ্ধে মত্ত প্রপাগাণ্ডায়
কাকেই বা দেবে তুমি দোষ, দোষের বোমা
ঝুলছে প্রত্যেকের পিঠে কাঁধে ও বাহুতে।

রাতের চুলের ভেতর বোসে আছি এখন
মুখোমুখি তুমি আর আমি

তোমার শাড়ি বেয়ে নেমে আসায় সুখ বাতাসের মতো
অনবরত ছুঁয়ে যাচ্ছে স্পর্শকাতর মন।

‘ঘুমোবে না তুমি?’ বোলতেই অনায়াসে
শুয়ে গেলে ইচ্ছাকৃত বাসনার মতো।

মানুষগুলো আজ আর ঘুমোবে না কেউ
অথচ এ শহরে তুমিই একমাত্র
শুঁয়ে আছো নিদ্রার বিছানায়।

(৮.৯.১৯৭৪)