শব্দ-শ্রমিক

আমি কবি নই-শব্দ-শ্রমিক।
শব্দের লাল হাতুড়ি পেটাই ভুল বােধে ভুল চেতনায়,
হৃদয়ের কালাে বেদনায়।

করি পাথরের মতাে চুর্ন,
ছিঁড়ি পরান সে ভুলে পুর্ন।
রক্তের পথে রক্ত বিছিয়ে প্রতিরােধ করি পরাজয়,
হাতুড়ি পেটাই চেনায়।

ভাষা-সৈনিক আমি জানি শুধু যুদ্ধ,
আমার সমুখে আলাের দরােজা রুদ্ধ-
তাই বারুদে সাজাই কোমল বর্নমালা,
তাই শব্দে শানিত আনবিক বিষ-জ্বালা
ধূর্জুটি-জটা পেতে রােধ করি অবক্ষয়ের সংশয়,
আমার এ-হাতে শব্দ কাস্তে ঝলসায়।

ভাষার কিষান চোখ মেলে চেয়ে দেখি,
চারিপাশে ঘাের অসম জীবন,
সভ্য পােষাকে পাশবিক বন।
সমতার নামে ক্ষমতাকে কোরে রপ্ত,
আমি জানি কারা জীবনে ছড়ায় পুঁজ-পোকা-বিষ তপ্ত-
জানি আমাদের কারা ধুতুরার ফুলে অন্ধ করেছে অবেলায়,
ছুঁড়ে দিয়ে গেছে নষ্ট নগ্ন বেদনায়।

আমি সেই পােড়া ভিত ভেঙে জেগে উঠেছি জীবনে,
আমি সেই কালাে ঘােড়ার লাগাম ধ’রে আছি টেনে।
বুকের ভাষাকে সাজিয়ে রনের সজ্জায়,
আমি বুনে দিই শব্দ-প্রেরনা মানুষের লোহু মজ্জায়।।

(২৫.০৩.৭৭ সিদ্ধেশ্বরী ঢাকা)