অস্তাচল – যাত্রা

(আবৃত্তি)

অমৃতলোকের যাত্রী হে অমর কবি, কোন্ প্রস্থানের
পথে তোমার একাকী অভিযান। প্রতিদিন তাই
নিজেরে করেছ মুক্ত, বিদায়ের নিত্য-আশঙ্কায়
পৃথ্বীর বন্ধন ভিত্তি নিশ্চিহ্ন করিতে বিপুল প্রয়াস
তব দিনে দিনে হয়েছে বর্ধিত। এই হাসি গান,
ক্ষণিকের অনিশ্চিত বুদ্বুদের মতো; নশ্বর জীবন
অনন্তকালের তুচ্ছ কণিকার প্রায় হাসি ও ক্রন্দনে
ক্ষয় হয়ে যায় তাই ওরা কিছু নয়, তুমিও জানিতে
‘কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন-যৌবন-ধন-মান’,
তবু তুমি শিল্পীর তুলিকা নিয়ে করেছ অঙ্কিত
সভ্যতার প্রত্যেক সম্পদ। সুন্দরের সুন্দর অর্চনা।
বিশ্বপ্রদর্শনী মাঝে উজ্জ্বল তোমার সৃষ্টিগুলি
পৃথিবীর বিরাট সম্পদ, স্রষ্টা তুমি, দ্রষ্টা তুমি
নূতন পথের। সেই তুমি আজ পথে পথে,
প্রয়াণের অস্পষ্ট পরিহাসে আমাদের করেছ
উন্মাদ। চেয়ে দেখি চিতা তব জ্বলে যায় অসহ্য
দাহনে, জ্বলে যায় ধীরে ধীরে প্রত্যেক অন্তর।
তুমি কবি, তুমি শিল্পী, তুমি যে বিরাট, অভিনব
সবারে কাঁদায়ে যাও চুপি চুপি এ কী লীলা তব।।