বাদল-বেদনা

বৃষ্টিতে ভেজা ইউক্যালিপটাসের পাতা থেকে
মিঠে ঘ্রাণ আসে, আমি বলি তাই ঝরুক বৃষ্টি,
বৃষ্টি ঝরুক, বর্ষা তােমাকে অভিবাদন দি’!
মিঠে ঘ্রাণ আনে মিঠে স্মৃতি তার, অতীতে হারাই।
জলে দু’জনের ভেজা গা-গতর ফিরে ফিরে দেখি,
যৌবন তেড়ে ওঠে বুনাে ষাঁড় যেন দড়ি ছিঁড়ে
রেসে দৌড়ােবে। রথে আমরাও বিষম চড়েছি
অষ্টমী স্নানে ব্রহ্মপুত্রে সাঁতরে ছুঁয়েছি
তার ইস্পাত-শরীরের ঘরে আরেক শরীর।

বৃষ্টি ঝরুক, ঝরুক বৃষ্টি অতীতে হারাই
আজ সব বাদ, সামাজিক চোখ, নিরর্থ নীতি
আজ লােকালয়ে শরম লজ্জা ভুলে দৌড়ােবাে
স্বপ্ন কোথায় হারায় দেখব নদী বালুচরে,
ভিজে শাড়ি আজ শরীরে লেপ্টে তন্বী পরমা
শিলাবৃষ্টিতে কাঁচামিঠে আম কুড়ােবার মতাে
আজ অবেলায় ধুলাে ঝেড়ে নিয়ে স্বপ্ন কুড়ােবাে।

এই যৌবনে যে বাঁধ দিয়েছি খুলে ভেঙে যাক
বৃষ্টি ঝরুক, ঝরুক বৃষ্টি জীবনের হ্রদে
টইটম্বুর জলে হাতড়াবাে নিজেরই শরীরে
বহুদিন ভুলে থাকা প্রিয় এক স্মৃতির শরীর।
তা হলে কি খুঁজে পাওয়া যাবে তাকে, যে হারায়, তাকে
কেউ পায় খুঁজে? এ যাবৎ তাকে কেউ কি পেয়েছে?

(গ্রন্থঃ নির্বাসিত বাহিরে অন্তরে)