অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা

মেজর জলিল ছিলেন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯নং সেক্টরে একজন সেক্টর কমান্ডার। তিনি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। ট্যাংক অফ শিরোমণি তে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য এবং এর পর সেই তিনিই হলেন স্বাধীন দেশের প্রথম রাজবন্দী! শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা উপাধি ব্যতিত আর কোনো স্বীকৃতি পান নি। এই বইটিতে বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেমন স্বাধীনতাপূর্ব পটভূমি, মুক্তিযুদ্ধ ও সেই সময়ে আওয়ামীলীগ এর নেতাদের ভারতে আয়েশি জীবন-যাপন, তাদের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা, ২৫শে মার্চের ঠিক পূর্বে বঙ্গবন্ধুর দ্বিমুখী আচরণ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ভারতীয় সেনাদের লুটাপাটের মহড়া, বাহাত্তরের সংবিধান ও তথাকথিত রাষ্ট্রীয় মূলনীতি সহ নানা বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় অধিকাংশ আওয়ামীলীগ নেতারা দেশের বিপদে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। যখন দেশের মাটিতে হানাদারদের বুলেটে তরুণদের রক্ত ঝরছিল, তখন তাদের নেতারা মুজিবনগরে বসে সরকার গঠন করেই সন্তুষ্ট ছিলেন। স্বাধীনতার সংগ্রামের সামনের সারিতে থাকার পরিবর্তে তারা বালিগঞ্জের বাড়িতে বসে তাস খেলছিলেন তা লেখককে মর্মাহত করে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্যের জন্য মেজর জলিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র সহায়তা চেয়েছিলেন। তখন ভারতীয় বাহিনী উলটো তাকে জেরা করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সম্পর্কে তথ্য আদায় করার চেষ্টা করেছিল। অস্ত্র সরবরাহের চেয়ে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছিলো পাকিস্তানি বাহিনীর তথ্য সংগ্রহ করা। বইটি মূলত মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সেক্টরের কমান্ডারের কি কি দেখেছেন তার চাক্ষুষ বর্ণনা। ভিন্ন আঙ্গিকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানার জন্যে অপরিহার্য বই এটি।