আমরা যে শুনেছি

আমরা যে শুনেছি
অশ্বত্থের ডালের মর্মর
দেখেছি জামের ছায়া
উঠানের ‘পর
ফড়িঙের গন্ধমাখা দুপুরের ঘাস
চ’লে গেছে যত দূর চলেছে আকাশ-

নরম নদীর পারে (বিকেলের)
আমরা দেখেছি ঘন বট
লাল-লাল ফলে ভরা
তার পাশে গোধূলির মঠ
একটা কি দু’টো সাদা বক
সন্ধ্যার নদীর জলে মাখিছে কুহক

আমরা দেখেছি চেয়ে
শীতের কুয়াশা
শালিখের (মৃত শিশু)- ভাঙা ডিম
হিম শূন্য বাসা
খেতে-খেতে সোনালি ফসল
চাঁদ পেঁচা শিশিরের জল-

আমরা দেখেছি চেয়ে
সন্ধ্যার আকাশে
রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে
দাঁড়কাক নীড়ে চ’লে আসে
অন্ধকারে ঘন তালবনের সবুজে
চিলের সোনালি ডানা মরে কী-যে খুঁজে

আমরা ধানের গুচ্ছে
ছড়ায়েছি হাত
পায়ে চলার পথে
দিয়েছি আঘাত
শুকনো পাতার বুকে- ঘাসের শরীরে
পৃথিবীর পথ থেকে পথে-পথে ফিরে

পুরোনো নদীর গন্ধ
হাওড়ের বাতাসের স্বর
নক্ষত্র আমের বীথি
গ্রামের প্রান্তর
কোকিলের ডাক
বার-বার আমাদের করেছে অবাক

শুনেছি মাছের শব্দ
জলের ভিতর
নয় গান- গুঞ্জন
পাতালপুরীর যেন স্বর
দুপুরের নিস্তব্ধ জগতে
কিংবা হিম জ্যোৎস্নামাখা রজনির পথে

আমরা দেখেছি সব- এই সব-
পৃথিবীতে এসে
দেখিবার আর-কিছু নাই তবে,
ব্যথা পেয়ে- রূপ ভালোবেসে
কিছু নাই আর
দেখিবার- কিংবা দেখাবার-