পুকুরের খাড়া পাড়ে

পুকুরের খাড়া পাড়ে- গর্তের ভিতরে
দেখিয়াছি বহু দিন: দু’টো মাছরাঙা ঘর করে
এক দিন জ্যোৎস্না-রাতে শুনিলাম কাতর চিৎকার
পর-দিন ভোরে দেখি সবুজ কমলা নীল জর্দা ডানার
মৃত মাছরাঙা এক প’ড়ে আছে জামরুল-তলে
খুঁটে-খুঁটে অনেকটা মাংস কে খেয়ে গেছে- পিপড়ের দঙ্গলে
বাকিটুকু ভ’রে আছে- দুপুরের রৌদ্র ওঠে তেতে…
তার পর কত দিন চ’লে গেল- এক দিন পথে যেতে-যেতে
আবার থেমেছি সেই পুকুরের পাড়ে একা এসে
আমলকী লিচু জামে সকালের রাঙা রৌদ্র উঠিতেছে হেসে
দেখিলাম কার্তিকের শূন্য রোদে গা ভাসায়ে বাতাসের কোলে
সঙ্গীহীন মাছরাঙা শীতাক্ত নদীর দিকে যাইতেছে চ’লে…
দেখা যায় দু’টো ডানা ডগমগ: সবুজ কমলা নীল জর্দা রঙের
রং নিয়ে মিছেমিছি কী যে খেলা সাথীহীন বিরহী জনের
সারা-দিন ঘুরে-ফিরে তবু সেই জমকালো রং দেখা যায়
সবুজ কমলা নীল লেগে আছে ব্যথিতের পালকে ডানায়
যার করুণায় জল স্নিগ্ধ হয়, লোকে বলে, মধু গন্ধে ভ’রে ওঠে ঘাস
বিরহী পাখিরে ল’য়ে সে যেন করিছে এই হাড়ভাঙা শূন্য উপহাস-